‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ প্রতিযোগিতায় উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা আহ্বান

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২

গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থা পর্যবেক্ষণ সেবার উন্নয়ন, শিশু স্বাস্থ্যের তথ্য প্রদান ও জরুরী প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী ভাবনার খোঁজে ‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার জন্য উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা আহ্বান করা হয়েছে।

মা ও শিশু স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পর্যালোচনার জন্য দেশীয় উদ্ভাবকদের কাছ থেকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও অনুশীলনের সমন্বয়ে এ উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা আহ্বান করা হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম পিএএ আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে এক অনলাইন অনুষ্ঠানে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন।

এট্আুই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এবং অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলোজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) যৌথভাবে ‘প্রেগনেন্সি মনিটরিং ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ শীর্ষক এ উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এমন একটি উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাকে পুরস্কৃত করা হবে যার মাধ্যমে প্রতিটি নারীকে তার গর্ভধারণকালীন সময়ে জরুরী সেবা সম্পর্কিত সব তথ্য প্রদান এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। যা একটি দ্বিমুখী যোগাযোগ ও ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গর্ভবতী মা ও নবজাতকের পরিচর্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সাধারণ মানুষের আচরণগত পরিবর্তনে কাজ করবে। এছাড়াও গর্ভবর্তী মায়ের গুরুত্বপূর্ণ শারিরীক তথ্য যেমন তাপমাত্রা, ঘুম, চলাফেরা, পালস ইত্যাদি সংরক্ষণ করবে।

এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা অনুবিভাগ) নীতিশ চন্দ্র সরকার, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার। অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী এবং এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল।

আগামী ৮ অক্টোবর, ২০২২ তারিখের মধ্যে দেশীয় উদ্ভাবকদের কাছে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তাবনা জমা দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিস্তারিত: challenge.gov.bd|

Nagad

প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে উদ্ভাবকদের কাছ থেকে পাওয়া উদ্ভাবনী প্রস্তাবনাগুলো থেকে ১০টি সেরা প্রস্তাবনা প্রদানকারী উদ্ভাবকদের নিয়ে একটি বুটক্যাম্প করা হবে। বুটক্যাম্পে সম্মানিত বিচারকদের সাথে উদ্ভাবকেরা তাদের উদ্ভাবনী প্রস্তাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ পাবেন। এর মধ্য থেকে সর্বোত্তম দুটি প্রস্তাবনা পরবর্তী ধাপের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বিজয়ী প্রস্তাবনা প্রদানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিয়ত মেনটরিং করার পাশাপাশি প্রস্তাবিত উদ্ভাবনীর গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য সীড মানি হিসেবে ১ কোটি টাকা প্রদান করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, মাতৃত্বকালীন, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় যত বেশি বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে দেশের উন্নয়নে তত বেশি অবদান রাখবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে প্রযুক্তিগত ও প্রথাগত পদ্ধতিতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। আমি আশা করি, আজকের উদ্বোধন হওয়া চ্যালেঞ্জ ফান্ডের মাধ্যমে এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে, যাতে গর্ভবতী মহিলাদের প্রয়োজনে তাদের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ ও এ সম্পর্কিত সকল সেবা পৌঁছে দেয়া যাবে।’

ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে এটুআই-এর গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নাগরিক সমস্যার সমাধানের জন্য এটুআই নিয়মিতভাবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। সমাজের বৃহৎ সমস্যাগুলো মোকাবেলায় প্রযুক্তির ব্যবহার বিশেষ করে ইলেক্ট্রামেকানিক্যাল ডিভাইস, ইন্টারনেট অব থিংস, নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে বিভিন্ন উদ্ভাবনের অনুসন্ধান, পরিচর্যা এবং ত্বরান্বিত করাই এটুআই এর আইল্যাবের মূল লক্ষ্য।
এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কাছে মাতৃত্বকালীন, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রচুর ডাটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এগুলো একটি জায়গায় এনে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারলে মাতৃত্ব ও শিশুস্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রতিযোগিতা আমাদের এমন একটি সমাধান খুঁজে পেতে সহায়তা করবে যেখানে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সংস্থার কাছে সংরক্ষিত ডাটাগুলোকে একটি প্লাটফর্মে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। এছাড়া, সম্ভাব্য মায়েদের সাথে যোগাযোগ ও তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিজেদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও ডিভাইস দিয়ে একটি নির্ভরযোগ্য, বাজারজাতকরণযোগ্য এবং সাশ্রয়ী সিস্টেম তৈরি করা যাবে।

এটুআই এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ডা. শবনম মোস্তারী’র সঞ্চালনায় অনলাইন অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এটুআই ইনোভেশন ফান্ড এর প্রধান নাঈম আশরাফী, এটুআই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, আইসিডিডিআর,বি, ওজিএসবি, স্বাস্থ্য খাতে জড়িত বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ যুক্ত ছিলেন।