মিতু হত্যা : স্ত্রী হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে চার্জশিট
মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী, সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী ও সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মিতু হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা, পিবিআইয়ের চট্টগ্রামের মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ‘তদন্তে বাবুল আক্তারকে আসামি হিসেবে পেয়েছি। সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদনটির কাজ শেষ করেছি। আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ পেয়েছি, কারা কারা জড়িত। বাবুল আক্তার কীভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তার তথ্য প্রমাণ পেয়েই অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি।’
অন্যদিকে, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বাবুল আক্তার। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৫ (১) ধারা এবং সংশ্লিষ্ট আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসপি মো. নাজমুল হাসান, মেট্রো এসপি নাঈমা সুলতানা, খুলশী থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা, সিএমপির ডিবি বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার একেএম মহিউদ্দিন সেলিম ও পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার ইন্সপেক্টর কাজী এনায়েত কবির।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে তারই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি।