শেষ সময়ের প্রস্তুতি

আত্রাইয়ে মৃৎশিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠছে দেবী দুর্গার রূপ

নওগাঁ প্রতিনিধি:নওগাঁ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৮:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাতৃত্ব ও শক্তির প্রতীক দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান জানানোর মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা আগামী পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে। পূজার সময় ঘনিয়ে আসায় শেষ মুহূর্তে দেবীকে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিমা তৈরির মৃৎশিল্পীরা।

শিল্পীদের নিপুণ হাতের ছোয়ায় ইতোমধ্যে মাটির কাজ শেষ করে চলছে রঙ তুলির কাজ। শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দশভূজা দেবীদুর্গাসহ বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমূর্তি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতি বছর অশ্বরের বিনাশ কল্পে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন।

এবছর উপজেলায় ৪৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বরুণ কুমার সরকার।

পূজা উৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দির গুলোতে চলছে সাজসজ্জার প্রস্তুতি। ইতি মধ্যে খড়, কাঠ, সুতা আর মাটি দিয়ে দুর্গাসহ নানা প্রতিমার কাঠামো তৈরি শেষে এখন চলছে প্রতিমায় রং দেয়ার কাজ। শিল্পী নিপুণ হাতে রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলছেন দেবী দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশসহ নানা প্রতিমা। পুরুষদের পাশাপাশি প্রতিমা তৈরির কাজে সহায়তা করছে বাড়ির নারী শিল্পীরাও। তবে প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়ার কারণে বাড়েছে প্রতিমার দাম।

আগামী ১-৫ অক্টোবর ৫ দিন ব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় শিল্পী ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিল্পীরা এখানে এসে প্রতিমা তৈরি ও রং তুলির কাজ করছেন। অন্যদিকে প্রতিমার পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র ঠিক ও তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে ঢাক-ঢোল, কাঁশি ও বাঁশির কারিগররা। বৈশ্বিক করোনা মহামারি অনেকটা কম থাকায় মাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

প্রতিমা শিল্পী যুগল কুমার জানান, দু’এক দিনের মধ্যে শুরু হবে রং তুলির আঁচড়। প্রতিমাগুলো মনোমুগ্ধকর ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি । আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হবে সকল প্রতিমা তৈরির কাজ। তিনি আরও বলেন, প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও ক্রেতারা প্রতিমার দাম বলছেন কম। বাধ্য হয়ে প্রতিমা বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে খুব একটা লাভের মুখ দেখছি না।

Nagad

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বরুণ কুমার সরকার জানান, এ বছর উপজেলায় ৪৯টি পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। উৎসবমুখর করতে পূজামণ্ডপগুলোতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে। সরকারি ও পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপন করা হবে।

পূজাকে সামনে রেখে সম্ভাবনার কথা জানালেন আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তারেকুর রহমান সরকার, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পূর্ণ করার লক্ষে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিন স্থরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দের বিভিন্ন মণ্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশা করি এবারের পূজায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবেনা। তবে এ জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।