বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকাথন:
পুরস্কার পেলো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বিজয়ীরা
অষ্টমবারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস-বেসিস এর উদ্যোগে ও বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ জমকালো পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সফলভাবে শেষ হলো। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই হ্যাকাথন একটানা ৩৬ ঘন্টা চলে।
১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাতটায় ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর অডিটোরিয়ামে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর উপাচার্য তানভীর হাসান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২-এর আহ্বায়ক তানভীর হোসেন খান বলেন, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২-এ এবার দেশের ৯টি শহর থেকে ২ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে। সেখান থেকে শীর্ষ ১১০টি প্রকল্পের মধ্যে হাইব্রিড মডেলে শীর্ষ ৫০টি প্রকল্প নিয়ে ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে এবং বাকি ৬০টি প্রকল্প নিয়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় দুইদিনব্যাপী হ্যাকাথন।
ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর উপাচার্য তানভীর হাসান বলেন, এর আগে দুই বছর আমাদের দেশের তরুণ প্রতিযোগিরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবারও আমি আশা করবো এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে। বিশেষত স্মার্ট ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এরকম প্রতিযোগিতার বিকল্প নেই বলে আমি মনে করি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের দেশের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর গ্রাউন্ড টিমে যেসব সম্ভাব্যময় তরুণরা কাজ করে তাদের মধ্যে আমি আগামীর বাংলাদেশকে খুঁজে পাই। বিশেষত, পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের মতো প্রতিযোগিতার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের জন্য এরকম গঠনমূলক প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজন করায় বেসিসকে ধন্যবাদ জানান।
সমাপনী বক্তব্যে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে সায়েন্টিস্ট রোল মডেল তৈরি হচ্ছে না। অথচ একটি দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য সায়েন্টিস্ট তৈরি করা বিশেষ ভাবে জরুরী। এবারের নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের বিজয়ীদেরকে পুরো বাংলাদেশের সামনে আমি রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই, যাতে তাদের দেখে আগামীতে তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞানী হবার ইচ্ছা ও আকাঙক্ষা তৈরি হয়। এছাড়া আমি বিগত বছরগুলোতে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের সেরা প্রজেক্টগুলো নিয়ে একটি মিউজিয়াম তৈরি করতে চাই, যেখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আসবে ও বিজ্ঞানী হবার উদ্দীপনা পাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান ও আরিফুল হাসান অপু।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-নাসা আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ৩১৩টি শহরে এ প্রতিযোগিতা বাস্তবায়ন করছে, যেখানে বেসিস বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্টগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) এ আয়োজন করে। নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে এবার ১ কোটি শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি ২ লাখ শিক্ষার্থীদের সরাসরি ও প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এ বিজয়ী হয়েছেন: ঢাকা- চ্যাম্পিয়ন: ইন্টারস্টেলা, রানার্স-আপ: টিম ছায়াপথ, ২য় রানার্স-আপ: টিম যান্ত্রিক, চট্টগ্রাম- চ্যাম্পিয়ন: ঐক্য, রানার্স-আপ: স্পেস আই, ২য় রানার্স-আপ: ব্লু মার্বেল, রাজশাহী- চ্যাম্পিয়ন: টিম পেব্যাক, রানার্স-আপ: গ্রীণ আর্থ, ২য় রানার্স-আপ: টিম ক্রিপ্টোনাইট, কুমিল্লা- চ্যাম্পিয়ন: ডায়মন্ড, রানার্স-আপ: এক্সেপশন জিরো, ২য় রানার্স-আপ: টিম সি ওয়েভস, সিলেট- চ্যাম্পিয়ন: টিম ইকারুস, রানার্স-আপ: মৃত্তিকা, ২য় রানার্স-আপ: টিম পপিন, খুলনা- চ্যাম্পিয়ন: ইনভিজিবল ম্যাটেরিয়াল, রানার্স-আপ: টিম গ্রাভিটন, ২য় রানার্স-আপ: লাইভ ইন মঙ্গল, বরিশাল- চ্যাম্পিয়ন: প্রিহিম প্রো, রানার্স-আপ: সেভ আর্থ, ২য় রানার্স-আপ: ওয়াচটেক, রংপুর- চ্যাম্পিয়ন: ফ্লাই হাই, রানার্স-আপ: পার্কার্স ক্রু, ২য় রানার্স-আপ: কসমিক কিউরেটর, ময়মনসিংহ- চ্যাম্পিয়ন: রেডশিফট, রানার্স-আপ: বুয়েট নভোচারী, ২য় রানার্স-আপ: ইনসেপশন লাস্ট হোপ।