আওয়ামী লীগকে রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগকে রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।তিনি বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এ মাস আওয়ামী লীগের, বিএনপির নয়। ১০ ডিসেম্বরের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। বিজয়ের পতাকা হাতে লাখ লাখ মানুষ রাজপথে নামবে। লাখ লাখ মানুষ পতাকা হাতে রাজপথে থাকবে।
ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার (১৯ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ‘স্বপ্ন ও সম্ভাবনার স্ফুলিঙ্গ- শেখ রাসেল’ শীর্ষক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাথে খেলবেন? আওয়ামী লীগের সাথে খেলায় পারবেন না। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভোট ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। কোনো বিদেশি শক্তি কাউকে ক্ষমতায় বসাবে না, দেশের জনগণই ক্ষমতায় বসাবে। বিদেশি শক্তির উপর ভর করে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। জনগণই আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে।
তিনি বলেন, ৭১ এর পরাজিত শক্তি বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরাও ডিসেম্বর থেকে পতাকা হাতে রাজপথে থাকবো। দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তার পাল্টা জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামীতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আছে। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস দিয়েছে শেখ হাসিনা সেটাই বলেছেন। এখানে অন্যায় কী করেছেন? আর উনি (মির্জা ফখরুল) দেখেছেন বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে নাকি এখন দুর্ভিক্ষ হচ্ছে। কোথাও একজন মরেছে? সোমালিয়ায় মরেছে। সোমালিয়ায় গিয়ে দেখুন। বাংলাদেশকে সোমালিয়া বানাবেন না। বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ সোমালিয়া-আফগানিস্তান হবে না। বাংলাদেশে সেই পরিস্থিতি হয়নি।
তিনি বলেন, সংকট আছে- সেটা প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন। একটা লোকও মরেনি কিন্তু এ পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে। আমাদের খাদ্য আছে, তেলের একটু সংকট আছে। কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। ব্রুনাই থেকেও জ্বালানি আনার ব্যাপারে সহযোগিতার চুক্তি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ করে যারা ‘অপকর্ম’ করছে তাদের হুঁশিয়ার করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লীগের নামে অপকর্ম করবেন না। যারাই অপকর্ম করছে তাদের এসিআর কিন্তু নেত্রীর কাছে জমা আছে। শেখ হাসিনার কাছে নমিনেশন চাইবেন, হিসাব আছে। যারাই অপকর্ম করে, গড ফাদারগিরি করে দলের দুর্নাম কামিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তারা কিছুতেই পাবেন না। এটা নেত্রীর পরিষ্কার নির্দেশ। খারাপ আছেন ভালো হয়ে যান। শুদ্ধ হয়ে যান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন ও আনিসুর রহমান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল হালিম। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই আলোচনা সভায় আয়োজন করা হয়। সভায় শেখ রাসেলের নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধাবৃত্তি, দরিদ্র তহবিলে বিশেষ অনুদান ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়।