রাস্তা করি, বৃষ্টি হলে রাস্তা নেই, টাকা কোথায় যায় : ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘রাস্তা করি, বৃষ্টি হলে রাস্তা নেই, টাকা কোথায় যায়। এ টাকা সরকারের টাকা, জনগণের ট্যাক্সের টাকা। তিনি বলেন, সেতু নির্মাণে ১১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে জাপানিদের হাতে। তবে চুরি চামারিও আছে, এটা অভ্যাস, চলতেই থাকবে। এদের কত টাকা দরকার, কত অর্থ, কত সম্পদের দরকার।
শনিবার(২২ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।


জনপ্রতিনিধিদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় ৩ চাকার গাড়ি বন্ধ করেছি। আমি যখন খবর নেই, বলে যে, অমুক জনপ্রতিনিধি গাড়ি চলতে দিয়েছেন। কেন চলবে? উনার কোনো স্বার্থ আছে। কেন চলবে? সামনে ভোট আছে। জীবন আগে না জীবিকা আগে? জীবন তো বাঁচাতে হবে। জীবন না বাঁচলে জীবিকা দিয়ে কী হবে! আমি বুকে হাত দিয়ে বলবো, ৫ বছর আগে ছিলাম প্রতিমন্ত্রী, এবার ১১ বছর হয়ে গেল। কোনো পারসেন্টেজ, কোনো কমিশন কখনো নেইনি। কিন্তু কারা আমার সঙ্গে কাজ করে…রাস্তা করি, এক পশলা বৃষ্টি হলে রাস্তা থাকে না। রাস্তা করে কী লাভ! টাকা কোথায় যায়? সরকারের টাকা জনগণের ট্যাক্সের টাকা, এই টাকা যায় কোথায়?
দুর্ঘটনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুর্ঘটনার সংখ্যা আগের চেয়ে কমলেও দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আগের চেয়ে বাড়ছে। এটা হলো বাস্তবতা অস্বীকার করে লাভ নেই। আজ এত স্থাপনা সারা বাংলাদেশে, এত আন্ডার পাস, ওভার পাস, মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, টানেল সবই হচ্ছে, তারপরও শৃঙ্খলা কেন নেই? শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ম্লান হয়ে যাবে। উন্নয়নের অবকাঠামো, এত সাফল্য সব ম্লান হয়ে যাবে যদি আমরা সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার মতো সৎ নেতা চাই। তার মতো সততা, ভালো মানুষ পঁচাত্তরের পরে একজনও আসেনি। কয়জন জনপ্রতিনিধি জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন, কয়জন পকেটের উন্নয়ন করেন সে হিসাব দিতে হবে। শেখ হাসিনা নিজে সৎ থাকবেন অন্য পকেটের উন্নয়ন করবে সেটা হবে না।
এতো বছরেও আইন (সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮) বাস্তবে আলোর মুখ দেখেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গতবারের প্রত্যাশা ছিল দুর্ঘটনা, যানজট ও মোটরসাইকেলের উপদ্রব কমানোর। এই ঢাকা শহরে এখন আর হেলমেট ছাড়া কোনো যাত্রী দেখি না, রাস্তায় যারা হেলমেট ছাড়া চলে তারা পলিটিক্সের লোক। পলিটিক্স ঠিক না হলে কিছু ঠিক হবে না।
রাজনীতিবিদদের উদ্দেশ্য সেতু মন্ত্রী বলেন, মানুষের অসুবিধা করে রং সাইডে যাবেন, আপনি কী নেতা, কেমন রাজনীতিবিদ? আপনাদের দিয়ে জনগণের কী কাজে আসবে?
শৃঙ্খলা না থাকলে সাফল্য ম্লান হয়ে যাবে। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে হবে। আগের সচিবকেও বলেছি, এদেরকে নিয়মের মধ্যে আনতে হবে। নীতিমালা করলে হবে না, নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। ঢাকা-চট্রগ্রাম(মহাসড়ক) খারাপ হতে চলেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ও নিরাপদ সড়ক চাই- এর সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।