পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস গড়াসহ অপচয় বন্ধের আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর

বরিশাল প্রতিনিধি:বরিশাল প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৬:৪৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২২

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি খাদ্যের অপচয় বন্ধে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রতিনিয়ত দেশের মানুষ বাড়ছে কিন্তু জমি কমছে। কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করে কৃষক ফলন বাড়িয়েছেন। দেশে ৪ কোটি মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয় যদিও এর থেকে এখন বেশ কিছু খাদ্যশস্য ননহিউম্যান কনজামশনে চলে যায়, যা হিসাবে ধরা হয়না।

তিনি আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) বরিশাল সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে ‘খাদ্য নিরাপত্তা’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।

চকচকে সিল্কি চাল খাওয়া থেকে জনসাধারণকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ধান থেকে চাল তৈরি করতে মিলাররা ৪ থেকে ৫ বার মেশিনে দেন, এতে চালের পুষ্টিকর অংশ চলে যায়; থাকে শুধু কার্বোহাইড্রেট। বারবার চাল মেশিনে পালিশ করতে বিদ্যুতের খরচও যোগ হয়। এতে চালের দাম বেড়ে যায় যা পরবর্তীতে ভোক্তার পকেট থেকে পরিশোধ করতে হয়।

তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে খাদ্য সংকট হতে পারে এমন সতর্কবার্তা বিভিন্ন সংস্থা হতে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটি সোনার চেয়ে খাঁটি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এদেশের উর্বর মাটিতে বছরব্যাপী শস্য ফলে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে বাংলাদেশে খাদ্য সংকট হবে না।

এসময় সাইলো নির্মাণ সংশ্লিষ্ট যৌথ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ও যথাযথ মান বজায় রেখে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন তিনি।

মন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে এগিয়ে আসার জন্য বিশ্বব্যাংককেও ধন্যবাদ জানান।

Nagad

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো: আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবত সাদিক আব্দুল্লাহ, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন, জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম। আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: রেজাউল করিম এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে খাদ্যমন্ত্রী নির্মাণাধীন বরিশাল রাইস সাইলোর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বরিশাল রাইস সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৩শ’ ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি নির্মিত হচ্ছে। এর নির্মাণকাল ধরা হয়েছে ২৪ মাস। এ পর্যন্ত সাইলোর কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৫২ শতাংশ।

সাইলোর ধারণক্ষমতা ৪৮ হাজার মেট্রিক টন। এতে প্রতিটি ৩ হাজার মে: টন ক্ষমতার মোট ১৬ টি সাইলো বিন রয়েছে। এ সব সাইলো বিনে কীটনাশক ব্যবহার ব্যতিরেকেই অত্যাধুনিক চিলার যন্ত্রের মাধ্যমে আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে মজুত চাল প্রায় ২ বছর সংরক্ষণ করা যাবে। সড়ক ও নৌপথে এ সাইলোর সরবরাহ ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

বরিশাল অঞ্চলের আটো রাইস মিলগুলোর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ ও আশুগঞ্জ সাইলো হতে উদ্বৃত্ত চাল এই সাইলোতে বাল্ক আকারে সরবরাহ করা হবে। অপরদিকে ৫০ কেজির বস্তা, ৩০ কেজির ব্যাগ এবং ৫ কেজির প্যাকেট করে সড়ক ও নৌপথে বিভিন্ন এলএসডি ও সিএসডিতে এই সাইলো হতে চাল বিতরণের জন্য প্রেরণ করা হবে। ৫ কেজির প্যাকেটে চালের সাথে পুষ্টি উপাদান মিশিয়ে বিতরণ করা হবে। ফলে এই সাইলো জনগণের পুষ্টির চাহিদা পূরণেও ভূমিকা রাখবে।