প্রেম-বিয়ে ভাঙে কেন?

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২২

বিয়ে হলো সেই অনাদিকাল থেকে পৃথিবীর সব সমাজের অতি পুরোনো প্রাতিষ্ঠানিক আচার। এই বিয়ে নারী-পুরুষের একসাথে থাকার একটি আইনসম্মত বৈধ মাধ্যম। আর প্রেম হলো বায়োলজিক্যাল ব্যাপার। প্রেমে যেন সব সময়ই পড়া যায়। এখন বিয়ে প্রেম করেই হোক আর পারিবারিক সম্বন্ধের মাধ্যমেই হোক, পান থেকে চুন খসলেই পরিবারে ধন্ধ শুরু। সেই থেকে মনোমালিন্য, বিষণ্ণতা–কষ্ট–অভিমান-যার শেষ পরিণতি হয়- প্রেমে ভাঙন বা বিচ্ছেদ।

এমনটা কেন হয়। দেখা গেছে এ ক্ষেত্রে হয়তো একজন আরেকজনকে দোষারোপ করে বিচ্ছেদ ঘটান। তবে একটি প্রেমের সম্পর্ক যেমন দু’জনের সম্মতিতেই গড়ে ওঠে; ঠিক তেমনই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার দায়ও দু’জনের উপরই পড়ে।

কেউ কে এমনও বলেন, প্রেম করলাম, ভালবাসলাম, সবার মতের বিরুদ্ধে দাঁড়ালাম; বিয়ে করলাম; তারপরও এত কষ্ট ? তবে ঠিক কী কী কারণে প্রেম কিংবা বিয়ে বেশিদিন টেকে না? চলুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ক সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ-যা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।

সারাক্ষণ প্রেমিকা বা বউয়ের ভুল ধরার অভ্যাস

বিভিন্ন বিষয়ে সঙ্গীর ভুল ধরার অভ্যাস আছে অনেকেরই। যা খুবই খারাপ অভ্যাস। একেকজনের চিন্তা-ভাবনা ও মতাদর্শ ভিন্ন, তাই সঙ্গীর ব্যক্তিত্ব নিয়ে কখনো প্রশ্ন তুলবেন না। এমনকি তার চেহারা, চলাফেরা, কথাবার্তা ইত্যাদি পরিবর্তন করা বা যেকোনো বিষয়ে খুঁত ধরার আগে দু’বার ভাবুন।

সঙ্গীকে সময় না দেওয়া
সঙ্গীকে পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার কারণেও কিন্তু আপনার প্রেম বা বিয়ে ভেঙে যেতে পারে। জীবনসঙ্গীর ভালো-মন্দকে প্রাধান্য দিতে হবে। তবেই একটি সম্পর্ক বিকশিত হবে।

Nagad

সঙ্গীর অবস্থান ছোট করে দেখা
সঙ্গীর অবস্থান ছোট হলেও সেটি মেনে নিন। তাকে ভালো কিছু করার উৎসাহ দিতে হবে। তাই বলে তাকে অবজ্ঞা বা হেয় প্রতিপন্ন করবেন না।

আস্থা না রাখা
একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে দু’জনের আস্থা, ভরসা ও ভালোবাসার ওপর নির্ভর করে। সঙ্গী যাতে আপনাকে বিশ্বাস করতে পারে, তা নিশ্চিত করুন। আপনি যদি সম্পর্কে সৎ থাকেন; তাহলে আপনার সঙ্গীও কখনো আপনার সঙ্গে প্রতারণা করবেন না।

কম যোগাযোগ
কর্মব্যস্ত জীবনে কারও এখন অবসর নেই! তাই বলে জীবনসঙ্গীকে সময় দেবেন না কিংবা তার সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রাখবেন না এমনটি ঠিক নয়।বর্তমানে বেশিরভাগ ব্রেকআপ ও ডিভোর্সের অন্যতম কারণ হলো যোগাযোগে অনীহা বা কম যোগাযোগ। আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, সঙ্গীর খোঁজ নিন কিছুক্ষণ পরপরই।

নিজেকে নিয়ে অহংকার করা
বেশিরভাগ সম্পর্কই অহংকার বা নার্সিসিজমের কারণে ভেঙে যায়। নিজের আদর্শকেই শ্রেষ্ঠ ভাবার অভ্যাস ত্যাগ করুন। সঙ্গীর সিদ্ধান্ত এমনকি তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন। নিজের সিদ্ধান্ত কখনো কারও উপর চাপিয়ে দেবেন না।

আর্থিক সমস্যা
আর্থিক সমস্যার কারণেও বেশিরভাগ সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্পর্ক ভবিষ্যতে অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হতে পারে এ ভেবেই বেশিরভাগ মানুষ এমন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন।

সঙ্গীকে সময় না দেওয়া

সঙ্গীকে পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার কারণেও কিন্তু আপনার প্রেম বা বিয়ে ভেঙে যেতে পারে। জীবনসঙ্গীর ভালো-মন্দকে প্রাধান্য দিতে হবে। তবেই একটি সম্পর্ক বিকশিত হবে।

এখন কি করবেন?

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়য়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, সুলতানা আলগিন কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, বিয়েতে গড়ানোর আগেই বাস্তব বুদ্ধি চোখ কান খোলা রাখা দরকার। প্রেম বা আনুষ্ঠানিক বিয়ে—সংসার পরিকল্পনা থাকতেই হবে। সবচেয়ে বড় প্রতিজ্ঞা হবে, আমরা ভালো থাকব। পরস্পর সুখে–দুঃখে থাকব। সব ঝড়ঝাপটা সামলাব। দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাব না।