গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে অনিয়ম: ১৩৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে অনিয়ম ও দায়িত্ব অবহেলা করায় প্রিজাইডিং কমকর্তাসহ ১৩৪ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রিটার্নিং অফিসার ছাড়া অন্য যাদের বিরুদ্ধে ইসি ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে আছেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), ১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১২৬ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশের ৫ উপপরিদর্শক (এসআই)।
আজ বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এ সুপারিশের সিদ্ধান্তের কথা জানান। গাইবান্ধা উপনির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১’ এর বিধান মতে এ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইসি।
সিইসি জানান, অনিয়ম সংঘটিত ১৪৫ নির্বাচনী কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টেরা ভবিষ্যতে কোনও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। অপরদিকে অনিয়মে সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়নি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, দায়িত্বে অবহেলার জন্যে রিটার্নিং অফিসার ইসির আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া একজন প্রিসাইডিং অফিসারকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত, ৫ এসআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, ১২৬ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ে, এডিসি ও একজন নির্বাহী হাকিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রের দায়িত্ব পালনকারী নির্বাচনী এজেন্টদের তালিকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কর্তৃক সিল করা ব্যাগে রয়েছে, যেহেতু নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ের ওপর আদালতের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই, তাই যে সব কেন্দ্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সে সব কেন্দ্রের ব্যাগ খুলে দায়ী এজেন্টদের একটি তালিকা তৈরি করা হবে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, গাইবান্ধা এই তালিকা করবেন।
সিইসি জানান, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের পুনরায় ভোটের তারিখ আগামী সপ্তাহে জানানো হবে। খুবই সংক্ষিপ্ত একটি সময় দেওয়া হবে। ভোটের একটি দিন দিয়ে পুনর্ভোটের সময় জানানো হবে।’
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি। সে সময় সিইসি অনিয়মে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমারকে আহ্বায়ক করে ইসির যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস সদস্য ও যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরীকে সদস্য সচিব করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়। পরে গত ১২ অক্টোবর ওই আসনে ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ভোট চলাকালীন ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে আসনটিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয় ইসি।
সারাদিন. ১ ডিসেম্বর.