নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের ১৬২টি দেশের ৫৩২৭টি দলকে হারিয়ে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করে নিয়েছে বাংলাদেশ। “মোস্ট ইন্সপাইরেশনাল” ক্যাটাগরিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের কুমিল্লা থেকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাসাতে মনোনয়ন পাওয়া দল ‘টিম ডায়মন্ডস’।
টিম ডায়মন্ডস-এর প্রকল্প “ডায়মন্ড ইন দ্য স্কাই” একটি ইন্টারেক্টিভ গেম ভিত্তিক স্পেস লার্নিং উপাদান যা বিশেষভাবে ১০ থেকে ১২ বছরের বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি শিশুদের নাক্ষত্রিক পরিবর্তনশীলতা সম্পর্কে আরও জানতে সক্ষম করে এবং রাতের আকাশ কীভাবে গতিশীল তা খুঁজে বের করে। এই গেমটি খেলে বাচ্চারা একটি তারার প্যাটার্ন চিনতে এবং তার রঙের পাশাপাশি তারার উজ্জ্বলতা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে।
টিমের সদস্যরা বলেন, আমাদের গেমগুলির উদ্দেশ্য হলো বাচ্চাদের তারার ঝিকিমিকি, রাতের আকাশে ধীরগতির পরিবর্তন এবং কেন ঘটেছিল তা বোঝার সুযোগ দেওয়া। এটা আমাদের বিশ্বাস যে আমাদের অ্যাপটি বাচ্চাদের অদেখা বিষয়গুলো দেখার জন্য একটি নতুন চোখ তৈরি করবে।
এ অর্জন সম্পর্কে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মিত হচ্ছে আমাদের তরুণদের হাত ধরে। তরুণদের নিয়ে গড়া ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত টিম ডায়মন্ডস বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করেছে যা নি:সন্দেহে আমাদের জন্যে বড় অর্জন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের দল তৃতীয়বারের মতো এবং পরপর গত দুইবছর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে যাত্রা অব্যাহত রেখেছি, এ অর্জন আমাদের প্রচেষ্টার পথে আরেকটি বড় মাইলফলক। আমি টিম ডায়মন্ডস এবং বেসিসকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ অর্জন স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার আরেকটি অনন্য দৃষ্টান্ত।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ বাংলাদেশ পর্বের আহ্বায়ক এবং বেসিস পরিচালক তানভীর হোসেন খান বলেন, গত ১৭ নভেম্বর ২০২২ নাসা ৩৫টি গ্লোবাল ফাইনালিস্ট দলের একটি তালিকা প্রকাশ করে স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২২ এর মূল ওয়েবসাইট। একমাত্র বাংলাদেশী দল হিসেবে সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল “টিম ডায়মন্ডস” এবং সকল বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ আমরা আবারো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। বিজয়ের মাসে এ অর্জন গোটা বাংলাদেশের। অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এ অর্জনের পিছনে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
টিম ডায়মন্ডস-এর দলনেতা তিশা খন্দকার বলেন, মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট অনেক অনেক শুকরিয়া আজকে আমরা বিজয়ী হিসেবে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পেরেছি। একটা মানুষের কাছে নিজের দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার চাইতে গৌরবের হয়তো আর কিছুই হতে পারে না। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যে সত্যিই ইনোভেটিভ তা আরো একবার প্রমাণ হয়ে গেল আমাদের মাধ্যমে।
বেসিস এবং বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় আয়োজিত নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এবারের আসরে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ শতাধিক প্রকল্প জমা পড়েছিল। অসম্পূর্ণ প্রকল্প বাতিল করার পর যাচাই-বাছাই শেষে ১২০টি প্রকল্পের প্রতিনিধিরা ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী হ্যাকাথনে অংশ নেয় এবং সেরা ১৮টি প্রকল্প নাসার জন্যে বাংলাদেশ থেকে মনোনীত করা হয়। বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সারাদিন. ১০ ডিসেম্বর