পেনশনের টাকা ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্ব: ৪০ ঘণ্টা পর বাবার লাশ দাফন
চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মনির আহমদ (৬৫)। মরদেহ হাসপাতাল থেকে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে করে কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নে বাড়িতে আনলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যায় কিন্তু লাশ দাফন হয় না।
বাবার লাশ দাফন না করেই পেনশনের টাকার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয় সন্তানেরা। অবশেষে জনপ্রতিনিধিরা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অবসরের টাকা সমবণ্টনের আশ্বাস দিলে মৃত মনির আহমদের (৬৫) ছেলেরা প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর বাবার লাশ দাফন করেন।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বড় উঠান ইউনিয়নে বৃদ্ধের নিজ বাড়িতে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা ১১টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে স্থানীয়রা জানান, মনির আহমদের অবসরের টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে মেজ মেয়ে বেবি আক্তারের সাথে অন্য ভাই-বোনদের বিরোধ চলছিল। শনিবার তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর এ নিয়ে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক বৈঠকও হয়েছে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার পর শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে এনে লাশ রেখে দেন বাড়ির পাশের সড়কে। সকাল থেকে অবসরে টাকা ভাগভাটোয়ারা নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলে।
বড় উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, “অবসরের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বৃদ্ধ মনির আহমদের লাশ সড়কে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রেখে গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকে বিরোধে জড়ায় তার সন্তানরা। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত লাশ সড়কেই পড়ে থাকে। পরে জনপ্রতিনিধিরা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বৃদ্ধের লাশ দাফনের পর তার অবসরের টাকা ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সমবণ্টনের আশ্বাস দিলে বৃদ্ধের ছেলেরা লাশ দাফনের অনুমতি দেন।”
সারাদিন/২৬ ডিসেম্বর/এমবি