‘কিছুই করি নাই শ্রেণি’ চোখ থাকতেও দেখে না. তারা দেখবেও না’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৪:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২২

এত কিছু করার পরও একটা শ্রেণি বলবে কিছুই করি নাই। ওই ‘কিছুই করি নাই শ্রেণি’ চোখ থাকতেও দেখে না। তারা দেখবেও না। তাদের মাথায় ওই নাই নাই শব্দ ঢুকে আছে। নাই নাই শুনবো না, আমরা সব করবো। আমাদের বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে-বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে নতুন বছরের পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং দেশ বিশ্ব পরিমন্ডলে পিছিয়ে থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং লার্নিং যেমন ই-শিক্ষা, ই-স্বাস্থ্য, ই-ব্যবসা, ই-ইকোনমি, ই-গভর্নেন্স হবে প্রযুক্তিগত জ্ঞান-ভিত্তিক।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। আগামীকাল ১ জানুয়ারি সারাদেশে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদযাপিত হবে।

তিনি বলেন, সমস্ত গ্রামসহ সারাদেশের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকবে এবং সরকার এ জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের লেখাপড়া, শিক্ষা, এ্যাডুকেশন, ই-বিজনেস, ই-ইকোনমি, ই-গভার্নেন্স সবকিছুই প্রযুক্ত জ্ঞান সম্পন্ন হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-১ উৎক্ষেপন করা হয়েছে এরপর হবে স্যাটেলাইট-২। সেটাও আমরা করবো। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এসব সময় দ্বীপাঞ্চল থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গাতেই আমরা ব্রডব্যান্ড অনলাইনে কাজ করার প্রযুক্তি নিয়ে যাব। একবারে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হবে। সে ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি।

Nagad

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সরকার জনগণের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য অনেক দিক থেকে কঠোরতা আরোপ করলেও শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তকের বই ছাপানোর ক্ষেত্রে কোনো আপোস করেনি।

সরকার প্রধান বলেন, এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ- এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সারা বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচাটা- অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে।

করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যহত রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যাক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবহার করতে পারে।

শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মুখস্থের পাশাপাশি মেধা বিকাশের জন্য তাদের উপযুক্ত চিন্তার সুযোগ দিতে হবে। সে কী বিষয়ে নতুন কিছু করতে পারে, সেটা আমরা দেখতে চাই। সবার জন্য নতুন নতুন জ্ঞান ও গবেষণার পথ উন্মুক্ত করতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে বহুমুখী শিক্ষা পায়, সে ব্যবস্থা করেছি।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটিও করে দিয়েছি। আমরা জাহাজ বানাবো, যুদ্ধ জাহাজ এবং প্লেনও বানাবো। এগুলো তো আমাদের ছেলে-মেয়েদেরই করতে হবে। এজন্য তাদের জন্য সব ধরনের শিক্ষার পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। প্রযুক্তি জ্ঞানে স্মার্ট হবে আমাদের পুরো জনগোষ্ঠী। পারবে না আমাদের ছেলে-মেয়েরা? জবাবে শিক্ষার্থীরা বলে, পারবো।

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তরিকতার সঙ্গে আমরা যতবেশি এই ছেলে-মেয়েদের গাইড করবো, তারা ততবেশি দক্ষ হয়ে ওঠবে। তারপরও একটা শ্রেণি বলবে কিছুই হয়নি, কিছুই করি নাই। ওই ‘কিছুই করি নাই শ্রেণি’ চোখ থাকতে দেখে না। তারা দেখবেও না। তাদের মাথায় ওই নাই নাই শব্দ ঢুকে আছে। নাই নাই শুনবো না। আমরা সব করবো।

তিনি আরও বলেন, শীত পড়ছে, গরম কাপড় পরতে হবে। শীতে ডেঙ্গু হয়, এটার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। স্কুল-কলেজ-বাড়িঘর নিজের প্রতিষ্ঠান-ঘর নিজেদের পরিষ্কার রাখতে হবে।

এ সময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, উভয় মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।