ঝিনাইদহে বৈরী আবহাওয়ায় আলু উৎপাদনে ক্ষতির আশঙ্কা
ঝিনাইদহে গত কয়েক দিনে তীব্র শীতের প্রকোপের সঙ্গে বেড়েছে ঘন কুয়াশা। তবে বর্তমান বৈরি আবহাওয়ায় আলুর ক্ষেতের ক্ষতি বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। তারা জানান, ছত্রাক আক্রমণ সহ পাতা পচে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আলুর উৎপাদন বা ফলন কম হবার ব্যাপক শঙ্কা রয়েছে।
কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার ছয় উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২৫৯ হেক্টর কম। এর মধ্যে হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ৯০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৮৬ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ১৮০ হেক্টরের মধ্যে আবাদ হয়েছে শতভাগ জমিতে, কালীগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে আলুর আবাদ। এখানে ৯৫ হেক্টরের জায়গায় আবাদ হয়েছে ৯৭ হেক্টর জমিতে। শৈলকুপায় ১১০ হেক্টরের মধ্যে ১০৯ হেক্টর, মহেশপুরে ৮১০ হেক্টরের মধ্যে ৫৫৪ হেক্টর এবং সদর উপজেলায় ৪২০ হেক্টরের মধ্যে আলুর আবাদ হয়েছে শতভাগ।
জেলার বিভিন্ন আলু ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেক কৃষক। কোন কৃষক জমিতে বিষ, ছত্রাক নাশক স্প্রে করছে। আবার কেউ জমিতে সেচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে আগাম আলু বাজারে নিতে চলছে প্রস্তুতি।
জেলার সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর গ্রামের কৃষক সৈকত আলী জানান, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়ছে। দুপুরের দিকে রোদের দেখা মিলছে আবার মিলছে না। এতে আলুর পচন রোগের আশঙ্কা রয়েছে। একই কথা জানান মহেশপুর নওদা গ্রামের অহিদুল ইসলাম সহ কয়েকজন কৃষক।
আলু চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে সার, কীটনাশক, বীজ, শ্রমিক, সেচসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হবে। আলুর উৎপাদন বিঘাপ্রতি জমিতে ৮০-১০০ মণ বা তার চেয়ে বেশি হতে পারে । বাজার দরের ওপর নির্ভর করে লাভ- লোকসানের হিসাব।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহ কৃষি অধিদফতরের ডিডি মো. আজগর আলী বলেন, বর্তমান আবহাওয়া আলুর ক্ষেতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হবে। কৃষক চাইলে রিডোমিল গোল্ড প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম, অর্থাৎ ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ওষুধ ভালোভাবে মিশিয়ে স্প্রে করলে ভালো ফল পাবেন। তবে এই আবহাওয়ায় আলুর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি।