পল্লীকবির সেই ‘আসমানীর’ ছেলে এখন ভিক্ষা করেন

ফরিদপুর সংবাদদাতাফরিদপুর সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১:৩৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

“আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমন্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি। একটুখানি হওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে, তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে।” এই বিখ্যাত কবিতাটি লিখেছিলেন পল্লীকবি জসিমউদ্দিন।

‘আসমানী’ কবিতার সেই আসমানীর ছেলে আশরাফুলের এখন ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছেন। আশরাফুল ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা। জীবন-জীবিকার তাগিদে ফরিদপুর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করে সংসার চালান পঙ্গু আশরাফুল।

আসমানীর ছেলে আশরাফুল গণমাধ্যমকে বলেন, এক সময় কাজ করে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ঢাকা থেকে ফরিদপুর ফেরার পথে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাটে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনার শিকার হই। এতে ডান হাতটি ভেঙ্গে যায়। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় এখন পুরোপুরি পঙ্গু। ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

আশরাফুল আরও বলেন, ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ আমাকে একটি পুঙ্গ ভাতা করে দিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় সাধ্য মতো সহযোগিতাও করতেন। পরে ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মজনু নির্বাচিত হয়ে ভাতাটি বন্ধ করে দেন। আমি পঙ্গু মানুষ কোনো কাজ করতে পারি না। কেউ কাজকর্মেও নেন না। তাই পেটের দায়ে ভিক্ষা করে কোনো মতে জীবন চালাচ্ছি।

ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ গণমাধ্যমকে বলেন, আশরাফুল পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের কবিতার আসমানীর সন্তান। আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আশরাফুলকে একটি পুঙ্গ ভাতাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেছি। এখনও সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করি।

এই ব্যাপারে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Nagad

ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: লিটন ঢালী গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যোগাযোগ করলে নিয়ম অনুযায়ী তার পঙ্গু ভাতাসহ তাকে সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করা হবে।

সারাদিন/১৪ জানুয়ারি/এমবি