‘পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কও অনন্য উচ্চতায় যাবে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩

জেলা প্রশাসকদের কাছে আমাদের দুটি নির্দেশনা দেওয়া আছে-বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, কম উচ্চতার যে ব্রিজগুলো আছে, সেগুলো করতে যেন বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদন নেয়। এ বিষয়টি যেন তারা (ডিসি) তদারকি করে।

তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে ভারত থেকে জাহাজ ‘গঙ্গা বিলাস’ বাংলাদেশ হয়ে আসামে যাবে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি সেটি খুলনার কয়রা অতিক্রম করবে। সেখানে কাস্টমস ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে ৫ ফেব্রুয়ারি আমরা তাদের মংলা বন্দরে স্বাগত জানাবো। তারা অনেকগুলো পর্যটন এলাকা ও জেলা অতিক্রম করে ভারতে যাবে। জেলা প্রশাসকদের বলেছি এ বিষয়টি যেন তারা নিবিড়ভাবে তদারকি করেন।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এটা আমাদের পর্যটন ক্ষেত্রে বিরাট এক সুযোগ। পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কও অনন্য উচ্চতায় যাবে। এজন্য জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করতে বলেছি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে দিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এ কার্য-অধিবেশন হয়।

ভারতের বিলাসবহুল পর্যটন জাহাজ ‘গঙ্গা বিলাস’র বাংলাদেশে আসার বিরোধিতাকারীরা প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

‘গঙ্গা বিলাস’ জাহাজ প্রকৃতির জন্য অনেক ক্ষতিকর হবে বলে পরিবেশবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি এ কথা ধরি তবে আদিম যুগে ফিরে যেতে হবে। সারা পৃথিবীতে নৌবাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থনীতি….চট্টগ্রাম বন্দরকে আমরা আমাদের অর্থনীতির লাইফ লাইন বলি কেন? এই জাহাজ চলাচল আমদানি-রপ্তানির কারণেই।

Nagad

খালিদ মাহমুদ বলেন, পর্যটন কীভাবে হবে! পর্যটন তো এভাবেই হয়। যারা এগুলো বলছে তারা বিদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কোন্নয়ন যেন না হয়, যেন সম্পর্কের ঘাটতি তৈরি হয়, সে কারণেই এসব কথা বলেন। তারা দেশের উন্নয়নের কথা বলেন না। এই চক্রটাই রামপালে পরিবেশের কথা বলে বাধা দিয়েছিল। আমরা মোংলা বন্দরের যে গভীরতা তৈরি করছি, সেখানে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়বে। অথচ এর বিরোধিতা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশ নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ৯০০ একর জমি আমরা উদ্ধার করেছি। তখন তারা (সমালোচক/বিরোধীরা) বলেছে- বেসরকারি থেকে সরকারি দখলে যাচ্ছে। এ কথাগুলো আমাদের শুনতে হয়েছে। এ ধরনের দেশবিরোধী মানুষের কথা শুনলে দেশ এগোবে না।

এসব বিষয়ে পরিবেশগত কোনো সমীক্ষা রয়েছে কি না- জানতে চাইলে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গঙ্গা বিলাস’ তো একটা জাহাজ। এরকম শত শত হাজার হাজার জাহাজ এ পথে চলাচল করছে। কিন্তু কই আমাদের পরিবেশগত তো কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের জীববৈচিত্র্য তো নষ্ট হয়নি। গত ১৫ বছর আমরা অনেক ইলিশ মাছ খাচ্ছি। অথচ ১৫ বছর আগে নদীতে ইলিশই ছিল না।

গত ১৩ জানুয়ারি ভারত থেকে যাত্রা শুরু করেছে প্রমোদতরী ‘এম ভি গঙ্গা বিলাস’। এটি বারানসি থেকে বাংলাদেশ হয়ে আসামের ডিব্রুগড় পর্যন্ত যাবে।জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে অধিবেশনের বিষয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে যাতায়াতের চ্যালেঞ্জ আছে বলে জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন। সেগুলো আমরা আমলে নিয়েছি। গত ডিসি সম্মেলনে তারা যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আজকে তারা যে প্রস্তাবনা দিয়েছেন সেগুলোও আমরা ভবিষ্যতে বাস্তবায়ন করবো।

রূপপুর পাওয়ার প্লান্টের মালামাল আমদানিতে রাশিয়ার একটি জাহাজ আসার কথা রয়েছে, যা আবার আমেরিকার নিষেধাজ্ঞায় আটকে আছে- জানতে চাইলে খালেদ মাহমুদ বলেন, জাহাজটি সর্বশেষ কোথায় আছে, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। যেহেতু তাদের ওপর একটা নিষেধাজ্ঞা আছে, আমাদের পক্ষ থেকে যা করার করেছি। এখন রাশিয়া কীভাবে জাহাজটি পাঠাবে, মালামালগুলো তাদের এজেন্টরা কীভাবে নিয়ে আসবে, এটি তাদের বিষয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সঙ্গে ডিসিদের সবসময়ই ভালো যোগাযোগ থাকে। আজকের সম্মেলনে তারা উপকূলীয় অঞ্চলে যাতায়াতের সমস্যা নিয়ে কথা বলেছে, আমরা সেগুলো আমলে নিয়েছি।