‘যতদিন বেঁচে থাকবো প্রযুক্তির উৎকর্ষের লড়াই নিয়েই বাঁচবো’

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩

পর্দা নামলো তিন দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা- ২০২৩’ এর। অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবো ডিজিটাল প্রযুক্তির উৎকর্ষের লড়াই নিয়েই বাঁচবো।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা- ২০২ ‘ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ভিডিও বার্তায় মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, এই মেলার মাধ্যমে অনাবিষ্কৃত মেধার বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ২০২০ সালের ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারি প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার আয়োজন করে। ২০২১ সালে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ যুগ অতিক্রম করেছি। ২০২১ ও ২২ সালে করোনার জন্য মেলার আয়োজন করা যায়নি। আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করছি যে আগামী দিনের এ মেলা হবে স্মার্ট বাংলাদেশ মেলা। এ বছরের এই মেলার মধ্য দিয়ে আমরা ডিজিটাল যুগের অর্জন গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানব সম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা’ ২০২৩ এর অন্যতম মূল লক্ষ্য বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত মেলায় তরুণদের উদ্ভাবন দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমাদের সন্তানদের রোবটসহ মেলায় যে সব উদ্ভাবন তারা প্রদর্শন করেছে আমি নিশ্চিত যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা বিশ্ব জয় করার যোগ্যতা অর্জনে সক্ষম হবেই। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ছেলে মেয়েদের মেধা যে কোন দেশের তরুণ-তরুণীদের চেয়ে অনন্য। তাদের একটু অনুপ্রেরণা দিলেই হবে।

ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার এই উদ্ভাবক বলেন, আমাদের পপুলেশন ডিভিডেন্ডের যে সুযোগটি আছে তা কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, আগামী ডিজিটাল প্রযুক্তি কী হবে তা এখনো কল্পনাও করা যায় না। আগামী দিনের প্রযুক্তি আমাদের ছেলে মেয়েরাই তৈরি করবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব‌্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের তৈরি আইওটি ডিভাইস সৌদি আরবে রপ্তানি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি ডিজিটাল বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত্তির উপর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন.স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট নাগরিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের নেতৃত্বের জায়গার ক্ষেত্রে যন্ত্রের উপর মানুষের সক্ষমতা থাকতে হবে।

Nagad

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও বার্তায় ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার উদ্বোধন করায় মন্ত্রী গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে যা করেছেন তা জাতির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল বাংলাদেশ ডিজিটাল যুগের অভিযাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৮- ৯৯ অর্থবছরে বাজেটে কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ‌্যাট ট‌্যাক্স প্রত্যাহার করে তিনি কম্পিউটারকে সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেন। ৯৭ সালে বাংলাদেশ ২জি, ২০১৩ সালে থ্রিজি, ২০১৮ সালে ফোরজি এবং ২০২১ সালে ফাইভজি যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। আইওটি ও ইউপিইউ সদস‌্য পদ অর্জন, টিন্ডটি বোর্ড গঠন এবং বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশের যে বীজ বপন করে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে গত ১৯ বছরের শাসনামলে তা আজ বিরাট মহি রূহে রূপান্তর লাভ করেছে যা বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী

‘ডিজিটাল বাংলাদেশের সংযুক্তির মহাসড়ক’ এই বছরের প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এবারের মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান। অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোাগাযোগ ও তথ‌্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস‌্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, বিটিআরসির চেয়ারম‌্যান শ‌্যাম সুন্দর সিকদার এবং জেডটিইর ব‌াংলাদেশ অফিসের ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক লিউ লিয়ান জেং বক্তৃতা করেন।

প্রসঙ্গত, এই মেলায় ৫২টি প‌্যাভিলিয়ন এবং ৭৭ টি স্টল বিভিন্ন ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ‌্য প্রদর্শন করে। মেলায় ৮ টি সেমিনারের মাধ্যমে সরকারের মাননীয় মন্ত্রী এবং অভিজ্ঞ বক্তারা বর্তমানের প্রযুক্তি ও আগামী দিনে প্রযুক্তির গন্তব্য নিয়ে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন। ২৮ জানুয়ারি শনিবার মেলা প্রাঙ্গণে সকাল ১০ টায় শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

পরে মন্ত্রী অনলাইন রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ‌্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সেরা স্টল ও স্পন্সরদের মধ‌্যেও ক্রেস্ট বিতরণ করেন মন্ত্রী।