তুরস্ক, সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প: বাড়ছে সংখ্যা, জরুরি অবস্থা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩

তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে পাঁচ শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানায়, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.৮। আর গভীরতা ছিল ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার।

এতে সিরিয়া ও তুরস্কের বিভিন্ন শহরে শত শত ভবন ধসে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে বলে জানা গেছে। তাদের উদ্ধারে দুই দেশেই অভিযান চলছে। আর লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যের সংখ্যা।

ভূমিকম্পের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভেঙে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছেন বহু মানুষ। ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত পুরো তুরস্ক। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে আটকেপড়াদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর এএফএডি ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে দেশটির সরকার ‘লেভেল-৪ সংকেত’ দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।

পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে দিয়ারবাকির এলাকার একজন আহত নারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা দোলনায় দোল খাওয়ার মতো কাঁপছিলাম। ঘরে আমরা নয়জন ছিলাম। আমার ছেলে এখনও ধ্বংসস্তুপের নিচে। আমি এখনও তার ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছি।’

এ প্রসঙ্গে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল গাজিয়ান্তেপ শহরের বাসিন্দা এরদেম বলেন, ‘আমি আমার ৪০ বছরের জীবনে এরকম পরিস্থিতি কখনও দেখিনি।’

তুরস্কের ভাইস প্রেসিন্টে ফুয়াত ওকতাই জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ২৮৪ জন মানুষ নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন ২,৩২৩ জন। ইতোমধ্যে দেশটি চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে আর এ মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানানো হয়েছে।

Nagad

আর সিরিয়ায় ২৩০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। সিরিয়ার সহকারী স্বাস্থ্যমন্ত্রী আহমেদ ধমিরিয়েহ দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এটি আরও বাড়তে পারে। আহতের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারে পৌঁছেছে।

সিরিয়ার যে স্থানে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে সেটি সরকার ও বিরোধীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা।

বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় বিরোধীদের সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স পরিস্থিতিটিকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা জানিয়েছে, সেখানে ভবনগুলো ধসে পড়েছে এবং তার নিচে অসংখ্য মানুষ আটকা পড়ে আছে।
আলেপ্পো প্রদেশে বিপুলসংখ্যক ভবন ধসে পড়েছে বলেও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারাসহ অন্যান্য শহর এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলজুড়ে সিরিয়ার গাজিয়ানতেপ শহরের ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি) বলছে, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় হতাহতের সংখ্যা বেশি।