তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ২৩০০ ছাড়িয়েছে, স্বজনহারাদের আহাজারি

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯:৩৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩

সংগৃহীত ছবি-

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে উভয় দেশের ২ হাজার ৩০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। এখনও অসংখ্য মানুষ ধসে যাওয়া হাজার হাজার ভবনের নিচে চাপা পড়ে থাকায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে কয়েক ঘণ্টা পরে আঘাত হানা ২য় ভূমিকম্পের ক্ষয়-ক্ষতির তথ্যও আসতে শুরু করেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

ভূমিকম্পের কারণে ওই অঞ্চলজুড়ে ভবন ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকেপড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলে এর গভীরতা ছিল প্রায় ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার। এটি পার্শ্ববর্তী সাইপ্রাস, মিশর ও লেবানন পর্যন্ত অনুভূত হয়।

তবে হতাহতের সংখ্যা কতটা বাড়বে, তা এখনও ধারণা করা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজে সহায়তা করতে বিমান পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া দেশটিতে ৪ মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক জরুরি সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

Nagad

দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এক বিবৃতিতে বলেন, ভূমিকম্পের পর শুরু করা কাজগুলো সমন্বয় করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল প্রেরণ করা হয়েছে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় উদ্ধার কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে।

ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে কীভাবে সহায়তা করা যায়, তা নিরূপণ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইউএসএইড ও অন্য ফেডারেল দেশগুলোকে এ নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

স্বজনদের আহাজারি

একজন বৃদ্ধা কুর্দি ভাষায় কান্নাকাটি করছেন। তার ভগ্নিপতি, ভাতিজি এবং ভাগ্নেরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন। তাদের জীবিত উদ্ধারের আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তিনি।

কিছু অল্পবয়সী প্রতিবেশী তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওই নারীকে সান্ত্বনা দিয়ে তারা বলছেন, ‘কয়েক মিনিট আগে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা আপনার পরিবারকেও উদ্ধার করবে।’

তবে ওই নারীর পরিবার ১২ তলা ভবনের নিচতলায় বসবাস করতেন; যে কারণে তাদের জীবিত উদ্ধারের ব্যাপারে খুব একটা আশাবাদী নন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তারা নিচতলায় ছিল। ঘুমাচ্ছিল। আমি জানি না কেউ তাদের কাছে পৌঁছাতে পারবে কি না… এখানে প্রচণ্ড ঠান্ডা। আমার বাচ্চাগুলো ধ্বংসস্তূপের নিচে জমে যাবে।’

এদিকেভূমিকম্পের আর্থিক ক্ষতি ১০০ কোটি ডলার থেকে এক হাজার কোটি ডলারের মধ্যে হতে পারে যা তুরস্কের জিডিপির প্রায় ২ শতাংশের সমান। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা, রয়টার্স, এএফপি