আইএইএ প্রধানকে ইরানে নিষিদ্ধ ঘোষণা, নজরদারি বন্ধের ঘোষণা
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-এর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসিকে ইরানে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। একইসঙ্গে সংস্থাটিকে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর অনুমতিও দেওয়া হবে না।
রোববার (২৯ জুন) ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে আব্বাস আরাগচি বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) আমাদের পারমাণবিক কেন্দ্রে কোনো ক্যামেরা বসাতে দেব না। সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির ইরানে প্রবেশও নিষিদ্ধ থাকবে।


এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রথম জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এসেছে, যখন ইরান ও আইএইএ-এর মধ্যে নজরদারি ও স্বচ্ছতা ইস্যুতে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলা এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি ইরানকে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য করেছে।
গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পরমাণু ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর একের পর এক বিমান হামলা চালায়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ হামলায় ৬০৬ জন নিহত ও ৫,৩৩২ জন আহত হন।
ইরানের পার্লামেন্ট সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে, যেখানে আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আইন পাসের ফলে নজরদারি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যার প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরাপত্তার উপর।
ইরানও ইসরায়েলের ওপর পাল্টা মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়। হিব্রু ইউনিভার্সিটি অব জেরুজালেমের তথ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় ২৯ জন নিহত ও ৩,৪০০ জনের বেশি আহত হন।
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ২৪ জুন থেকে দুই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু তাতে উত্তেজনা পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আইএইএ প্রধানের ইরান প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এবং নজরদারি বন্ধ করার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ ঘটনায় পারমাণবিক কর্মসূচির স্বচ্ছতা ও আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের অবস্থানকে আরও চাপে ফেলতে পারে।