তুরস্কের ১০ প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, বাড়ছে লাশ

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:৫৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৩

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ১০টি প্রদেশে বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং কয়েক হাজার মানুষ মারা যাওয়ার পর তিনি এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

সময় যত গড়াচ্ছে ক্রমেই ফুটে উঠছে তুরস্ক ও সিরিয়ায় সোমবারের ভূমিকম্পের ভয়াবহতার চিত্র। দুই দেশে এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। যারমধ্যে শুধু তুরস্কেই ৩ হাজার ৫৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত ১৫ হাজারেরও বেশি। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়ে আছেন অগণিত মানুষ।

মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, সিরিয়ার নিকটবর্তী বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে পুনরুদ্ধারের কাজ একটি প্রচণ্ড শীতকালীন ঝড়ের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে যা কিছু রাস্তাকে চলাচলের অনুপযোগী করে তুলেছে এবং খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহের গতি কমিয়ে দিয়েছে। তাই উদ্ধার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে দ্রুত ত্রাণ কর্মীরা যেতে পারবেন। এছাড়া সেসব এলাকায় তাড়াতাড়ি আর্থিক সহায়তাও দেয়া যাবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ১৪ মে তারিখে নির্বাচনের ঠিক আগে জরুরি অবস্থার অবসান হবে।

এরদোগানের সরকার প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের ধীর প্রতিক্রিয়া হিসাবে তার সমালোচকদের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে আসছে।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার ভোরে মানুষ ঘুমিয়ে ছিলেন। তখনই তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিরিয়া সীমান্তবর্তী গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। পরে দুপুরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। শক্তিশালী দুটি ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Nagad

আজ মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তুরস্কে নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ৪১৯ জন জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া ২০ হাজার ৪২৬ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভূমিকম্পে তুরস্কে ১১ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে হতাহতদের উদ্ধারে ২৫ হাজার কর্মী কাজ করছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬০২ জনে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, দেশটিতে ৩ হাজার ৫৪৮ জন আহত হয়েছে।

৮৪ বছরের মধ্যে তুরস্ক এত শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখেনি। সবশেষ ১৯৩৯ সালে উত্তর-পূর্ব তুরস্কে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া ১৯৯৯ সালে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমীতে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সূত্র: এপি, আলজাজিরা