নওগাঁয় রাসায়নিক সার ও বিষমুক্ত সমন্বিত সবজি চাষে সারা
নওগাঁয় ৩৫ জন পুরুষ ও মহিলা সমন্বিত ভাবে রাসায়নিক সার এবং বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে এলাকায় ব্যাপক সারা ফেলেছেন। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ এসব বিষমুক্ত সবজি ক্রয়ে আগ্রহী হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন এসব কৃষক।
পিকেএসএফ এর সহযোগিতায় স্থানীয় দাবী নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে নওগাঁ সদর উপজেলার কির্ত্তীপুর, উলিপুর এবং ইকরকুড়ি এই এলাকায় পৃথক পৃথক তিনটি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়। এ তিনটি ক্লাস্টারের মোট ৩৫ জন মহিলাকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে তাদের নিজস্ব ৩০ বিঘা জমিতে এসব সবজি চাষ করানো হয়। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে বেগুন, টমেটো এবং লাউ।
কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ছাড়াই সবজি চাষ করায় উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা অধিক লাভবান হচ্ছেন।
ইকরকুড়ি গ্রামের মোছা: বুলবুলি বেগম। তার স্বামীর সাড়ে তিন কাঠা জমিতে উৎপাদন করেছেন লুনা বেগুন। সব মিলিয়ে এই বেগুন চাষে তাঁর খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ঐ জমি থেকে ১৫০০০ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন।
ঐ গ্রামের রইচ উদ্দিন নামের এক কৃষক ৭ কাঠা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। এতে তার মোট খরচ হয়েছে ২/৩ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ২০ টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। খরচ মাত্র ১ হাজার টাকা।
মোছা: দেলোয়ারা বেগম নিজস্ব ৭ কাঠা জমিতে চাষ করেছেন লাউ। এখন পর্যন্ত ১০ হাজারটাকার লাউ বিক্রি করেছেন। জমিতে রয়েছে আরও লাউ। একইভাবে শামসুন্নহার লাউ চাষ করেছেন ৭ কাঠা জমিতে। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ১৩ হাজার টাকার লাউ। নীট আয় করেছেন ১১ হাজার টাকা।
একই গ্রামের সারাজুল ইসলাম তার ৫ কাঠা জমিতে লাগিয়েছেন টমেটো। তার খরচ হয়েছে মাত্র ৬ শ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি টমেটো বিক্রি করেছেন ৭ হাজার টাকা। জমিতে রয়েছে আরও টমেটো।
এসব বিষমুক্ত সবজির কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার কারণে কৃষকদের উৎপাদিত সবজি হাটে বা বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। আশে পাশের স্বাস্থ্য সচেতন মানুষরা জমি থেকেই এসব রাসায়নিক সার ও বিষমুক্ত সবজি কিনে নিয়ে যান।
নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন সংবাদকে জানিয়েছেন, ক্রমেই মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছেন। বিষমুক্ত খাদ্যের প্রতি অধিক আগ্রহী হয়ে উঠছেন। কাজেই বিষমুক্ত এসব সবজির প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারা এসব জমিতে জৈব সার (ট্রাইকো কম্পোষ্ট), ফেরোমন ফাঁদ, রঙিন ফাঁদ, বিষটোপ ইত্যাদি ব্যবহার করছেন।