ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের আরও ৫৮ লাখ উদ্ধার, মাস্টারমাইন্ড গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২৩

আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন অর রশীদ। সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর উত্তরায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত মাস্টারমাইন্ড আকাশসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় ৫৮ লাখ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজধানীর কড়াইল বস্তির বৌ-বাজার ও নেত্রকোণা জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. হৃদয় (২১), মো. মিলন মিয়া (২৯) ও মাস্টারমাইন্ড আকাশ।

এর আগে গত রোববার (১২ মার্চ) দুই কোটি ৫৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। ছিনতাই হওয়া সোয়া ১১ কোটি টাকার মধ্যে তিন দফায় ৭ কোটি এক লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার হলো। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মাস্টারমাইন্ড আকাশসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা ডাকাতির ঘটনায় আগে গ্রেপ্তার করা ৮ জনকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পাঠালে প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। টাকা ডাকাতির পেছনে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। কেউ ছিল পরিকল্পনাকারী, কেউ মোবাইল ফোন ও সিম সংগ্রহকারী, কেউ শুধুমাত্র ঘটনার সময় কাজ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি জানান, মূল পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে কাজ করেন ৪-৫ জন। তাদের মধ্যে আকাশ ও সোহেল রানা নামের দুজন ডাকাতির মূল ছকটি সাজান। সোহেল রানা আগে মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের গাড়িচালক ছিলেন। চালক থাকার কারণে তিনি মানিপ্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের খুঁটিনাটি বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তারা জানান যে, এক প্রকার বাধাহীনভাবেই তারা মানি প্ল্যান্টের মাইক্রোবাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। হোতা আকাশ টাকা লুটের পর মাইক্রোবাসে উঠতে না পারলেও সেখান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মাস্টারমাইন্ড আকাশ ও সোহেল রানা ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা লুট করার বিষয়টি ইমন মিলন ও সানোয়ারের কাছে গোপন রাখে। তারা জানায়- হুন্ডির কিছু টাকা লুট করবে সেখানে প্রশাসনের লোক থাকবে। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সবাই একত্রিত হয়ে মাইক্রোবাসে ওঠার পর বুঝতে পারেন বড় কিছু ঘটতে যাচ্ছে। ডাকাতির পর মূলহোতা আকাশ মাইক্রোবাসে উঠতে না পারায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

Nagad

এর আগে ঘটনার দিন (৯ মার্চ) রাতে মানি প্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসের বাদী হয়ে ডিএমপির তুরাগ থানায় মামলা করেন। সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় করা এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৯ মার্চ সকাল ৭টার পরে রাজধানীর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে বেসরকারি ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়। দিনের আলোতে প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে নজিরবিহীন এ ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া টাকাভর্তি চার বক্সের মধ্যে তিনটি উদ্ধারের কথা জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় সাতজনকে।