‘দেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে পতিত হচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৬:২২ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০২৩

অবৈধ অনির্বাচিত দখলদার সরকারের অধীনে বাংলাদেশ এখন প্রায় ধ্বংস রাষ্ট্রের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘দেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে পতিত হচ্ছে। অর্থনীতিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার কারণে তাদের (সরকারের) দুর্নীতির কারণে আজ জনগণের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়েছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলাম, সেই অধিকারগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।’

বুধবার (৩ মে) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এলডিপির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মিথ্যাবাদী, এরা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছে। তাই এদের সঙ্গে আলোচনার কোনো যুক্তি নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অতীত আলোচনায় সবাই সেটা অবগত হয়েছে। আর সে কারণেই জনগণ এই সরকারকে গণআন্দোলনের মাধ্যমে বিদায় করতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের পায়ের নিচে বর্তমানে মাটি নেই। এরা সবকিছু নিয়ে মিথ্যা প্রচার করে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মিথ্যাচারকে তারা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা বলছে, তাদের অধীনে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলোই অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়েছে-এরচেয়ে হাস্যকর আর কী হতে পারে। দেশের মানুষের পাশাপাশি এই সরকার বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফকেও মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে।

মির্জা ফখরুল এসময় আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে, শান্তি শৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি; এখানে লুটপাট ও একই সাথে ব্যাংকগুলোকে পুরোপুরিভাবে খালি করে দেওয়া, দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে দিয়ে অর্থব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাখাত সবকিছুতেই একটি নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে আমাদের ন্যূনতম যে অধিকার, ভোট দেওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার, আমাদের স্বাধীন মত প্রকাশের যে অধিকার, তা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলাম, সেই অধিকারগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে, একটি মাত্র উদ্দেশ্য তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আবারো প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেটা তারা করতে চেয়েছিল ১৯৭৫ সালে।

Nagad

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সত্যিকার অর্থে দেশে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, সেই দলগুলোর সাথে আমরা এক জোট হয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি; গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য, আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে আমরা যে দাবিগুলো দিয়েছি তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগ। আমরা নির্বাচনকালীন সময় দেখেছি এখানে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে জনগণ ভোট দিতে পারে না। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুটি নির্বাচন দেখেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে, সেই দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। সেই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যারা আমাদের সহযোগি তাদের সাথে আমরা আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো দলের সাথে আমরা আলোচনা করেছি। আজকে কর্নেল অলি আহমেদ আমাদের সাথে আলোচনা করতে এসেছেন। আজকের আলোচনা আমাদের শেষ নয়। আবার তার দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথেও আলোচনা করবো।

এ সময় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, সরকার চায় আবার একক নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে। কিন্তু দেশের সব জনগণ চায়, সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। যে নির্বাচনে সবাই স্বাধীনভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারবে। যে নির্বাচন একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই সম্ভব বলে আমরা মনে করি। একসময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি আওয়ামী লীগও করেছিল, সেটা তাদের অস্বীকার করার সুযোগ নেই।