নেদারল্যান্ডের লিলিয়াম এখন ঝিনাইদহে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১:০৭ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২৩

শীত প্রধান দেশ নেদারল্যান্ডের ফুল লিলিয়ামের পরীক্ষামূলক চাষ এখন শুরু হয়েছে ঝিনাইদহে । জেলার গান্না ইউনিয়নে রুরাল রিকন্সট্রাকশন ফাউন্ডেশন (আরআরএফ) সাসটেইনবল এন্টারপ্রাইজ প্রোজেক্টের আওতায় এ ফুলের চাষ হচ্ছে ।

জানা গেছে, ২০০৮ সালে দেশে প্রথম লিলিয়াম ফুলের চাষ শুরু হয় পরীক্ষামূলকভাবে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় লিলিয়াম ফুলের জাত উন্নয়ন করে বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটিতে চাষের উপযোগী করতে গবেষণা করে। বাংলাদেশে লিলিয়াম ফুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশে লিলিয়াম ফুলের চাষ করতে পারলে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।

আরআরএফ সূত্রে জানাযায়, ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার ৮ জন চাষিকে পরীক্ষামূলক ভাবে জারবেরা, গোলাপ ও শীতপ্রধান দেশের লিলিয়াম ফুল চাষের একটি করে শেড নির্মাণ করে দিয়েছে। ১৪ শতক জমিতে নির্মিত শেডে ১৪০০ শত জারবেরা, দুইশত গোলাপ ও সাড়ে তিনশত লিলিয়াম ফুলের খন্দ দেওয়া হয়েছে। নেদারল্যান্ড থেকে নিয়ে আসা এই বীজ যে সময়ের মধ্যে কৃষকের হাতে পৌছানোর কথা ছিল তার থেকে প্রায় দেড় মাস পরে কৃষকদের দেওয়া হয়। বীজ দেরিতে পাওয়া নিয়ে কৃষকের মধ্যে যে হতাশা ছিল ফলনে সেই হতাশা দূর হয়েছে কৃষকদের। অসময়েই ভালো ফলন হয়েছে।

তারা আরো জনায়, আরআরএফ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আদম আলী, মারুফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, গান্না গ্রামের শরিফুল ইসলাম, চান্দেরপোল গ্রামের অরুপ সরকার, দহিজুড়ি গ্রামের সোলাইমান হোসেন, কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া গ্রামের কামরুল ইসলাম ও তালিনা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক লিটনকে প্রজেক্টের আওতায় ১০লাখ টাকা ব্যয়ে ফুলের শেড করে দেয়। ১৪ শতক জমিতে ৩ জাতের বিদেশি ফুল চাষ করা হচ্ছে।

পাইকপাড়া গ্রামের চাষি মারুফ হোসেন জানান, বাংলাদেশে এই ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়ে। সেই কারণে কৃষি বিভাগ বাংলাদেশে চাষের উদ্যোগ নেয়। আরআরএফ এর একটি প্রকল্পে আমাদের শেড করে দেওয়া হয়েছে। সঠিক সময়ের মধ্যে আমরা উৎপাদন করতে পারলে একেকটি লিলিয়াম ফুল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম। আমাদের বীত পেতে দেরি হয়। কিন্তু অসময়েও আমাদের ফলন ভালো হয়েছে। একেকটি গাছে ৬-৭ টি ফুল ধরেছে। বর্তমানে ঢাকায় ৮০ টাকা পিচ বিক্রি হচ্ছে।

কৃষক আদম আলী জানান, শেডে জারবেরা ফুল গাছেও ফুল এসেছে। আগামী বছর জারবেরা ফুলের একটি ভালো যোগান যাবে আমাদের অঞ্চলের শেড থেকে।

Nagad

গান্না বাজার ফুল চাষি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, লিলিয়াম মূলত শীতকালে আবাদ হয়। এখন আমাদের দেশে গ্রীষ্মকাল চলছে। তারপরেও ফুলের ভালো ধরন, গাছও স্বাস্থ্যবান। ভালো দামে বেচতে পারলে এই চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, আরআরএফের একটি প্রকল্পে এই বছরই শেড নির্মাণ করে চাষ শুরু হয়েছে। এবছরই আমরা গন্ধযুক্ত লিলিয়াম ফুলের চাষ করলাম। তিনি বলেন, গান্না অঞ্চলের মাটিতে লিলিয়াম ফুলের চাষ করলে ভালো ফলন আসবে আশা করা যাচ্ছে।