অনুমতি পেলো ২৩১ সদস্যের মেট্রো পুলিশ ইউনিটের

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৩

স্বপ্নের মেট্রোরেল চালু হলেও নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক দুশ্চিন্তায় পড়ে কর্তৃপক্ষ। চালু হওয়ার পরে ঘটেছে অঘটনও। এবার মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় মেট্রো পুলিশ ইউনিট বা এমআরটি পুলিশ গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে সরকার। পুলিশের এই ইউনিট গঠনে একজন উপমহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে ২৩১ সদস্যের জনবল চূড়ান্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-৩ শাখার উপসচিব নূর-এ-মাহবুবা জয়ার সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রায় মাসখানেক আগে দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া ঢিলে মেট্রোরেলের একটি জানালার কাচ ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগ আরও ঘনীভূত হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের এখনো আইনের আওতায় আনতে পারেনি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে সরকারের হাইকমান্ড। যে কোনো উপায়ে দুর্বৃত্তদের ধরতে বলা হয়েছে।

গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম স্বপ্নের মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ৫ মাস পর মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় অনুমতি পায় ‘ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ’ বা ‘এমআরটি পুলিশ’।

অবশেষে পুলিশের এ ইউনিটটি গঠনে একজন উপমহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে ২৩১ জনের জনবল চূড়ান্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- এমআরটি মেট্রোরেল সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনটি ক্যাডার পদ ও ২২৮টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ২৩১টি পদ সৃজন এবং ১৫টি যানবাহন টিওএন্ডইভুক্তকরণ হয়েছে।

কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক কাজের জন্য পদ: একজন ডিআইজি, একজন পুলিশ সুপার, দুজন পরিদর্শক, একজন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), একজন ইন্সপেক্টর (সশস্ত্র), দুজন এসআই (নিরস্ত্র), দুজন এসআই (সশস্ত্র), তিনজন এএসআই (নিরস্ত্র), চারজন এএসআই (সশস্ত্র), পাঁচজন নায়েক, ১০ জন কনস্টেবল, একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন হিসাব রক্ষক, একজন উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দুজন।

Nagad

এমআরটি লাইন-৬ এর জন্য পদ: একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ছয়জন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র), দুজন এসআই (নিরস্ত্র), ৩৪ জন এএসআই (নিরস্ত্র) ও ১৫৩ জন কনস্টেবল।

যানবাহনের বিবরণ: একটি জিপ, ৪টি পিক-আপ ও ১০টি মোটরসাইকেল।

জানা যায়, সার্বিক দিক বিবেচনায় মেট্রোরেল ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেট্রোরেলের জন্যও আলাদা ইউনিট গঠনের প্রস্তাব ছিল শুরু থেকেই। রেলওয়ে পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের একটি অন্যতম প্রাচীন বিশেষায়িত ইউনিট। এটি ১৮৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। রেলওয়ে পুলিশ তার অধিক্ষেত্রে জেলা পুলিশের মতোই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, তদন্ত ও অন্যান্য পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। এমআরটি পুলিশও অনুরূপভাবে মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা, যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি নিয়ম-শৃঙ্খলা ও অপরাধ দমনে কাজ করবে।

উদ্বোধনের আগে ও উদ্বোধন পরবর্তীসময়ে এমআরটি পুলিশ গঠনের আগ পর্যন্ত নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স ও থানা পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে আসছিল।

জানা গেছে, এমআরটি পুলিশ মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা, যাত্রীদের নিরাপত্তার পাশাপাশি নিয়মশৃঙ্খলা ও অপরাধ দমনে কাজ করবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা উত্তর ও আগারগাঁও স্টেশন চালুর মাধ্যমে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর একে একে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত সবগুলো স্টেশন খুলে দেওয়া হয়। মেট্রোরেল চালু হওয়ার শুরু থেকেই এর নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক আগে দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া ঢিলে মেট্রোরেলের জানালার কাচ ভেঙে যায়। এ ঘটনায় উদ্বেগ আরও ঘনীভূত হয়।