‘মার্কিন ভিসা নীতি শেখ হাসিনার চাওয়াকে জোরালো করেছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৪:১১ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২৩

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, তা অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাওয়াকে আরও জোরালো করেছে। এ ভিসানীতিকে বাংলাদেশ কোনো বাড়তি চাপ মনে করছে না ।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) নিজেদের নীতি নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু আমাদের দেশে তো আর গুজব রটনাকারীর অভাব নেই। তাই বিভিন্ন রকম বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। যে বক্তব্য তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দিয়েছেন, সেটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেটা চাচ্ছেন, সেটিকে আরও জোরালো করেছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই এ দেশের গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক। এ দেশে গেল ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই একটি গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া চলছে। হাজার হাজার নির্বাচন হচ্ছে এবং নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার এসেছে। কিন্তু ২০০৮ সালের আগে যদি দেখেন, যারা ভোটারবিহীন নির্বাচনে জয়লাভ করেছে, তাদের কিন্তু এ দেশের মানুষ গদিতে রাখেনি, কয়েক দিন পর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।

‘আওয়ামী লীগ সবসময়ই জনগণের ওপর বিশ্বাস রাখে, জনগণের ভোটের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় আসতে চায়।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জ্বালাও-পোড়াও চাই না। যে কারণে আমরা বিশ্বাস করি, (মার্কিন ভিসানীতির কারণে) জ্বালাও-পোড়াও করা দলগুলো একটু সচেতন হবে। জ্বালাও-পোড়াও আর রাস্তা দখল করে আন্দোলন কমে যাবে। তারা যদি আইনানুগ কোনো আন্দোলন করে, তাহলে সরকার তাদের অ্যাকোমোডেট করতে খুবই আগ্রহী।

Nagad

তিনি বলেন, কিন্তু মানুষকে অতিষ্ঠ করা, সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করা, গতবার তারা তিন হাজার ৮০০টি গাড়ি ও ২৭টি বগি জ্বালিয়েছে, আমরা তা চাই না। গণতন্ত্র দেশে আছে বলেই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক নিয়মে দেশ পরিচালনা করছেন বলেই, দেশে উন্নতি হয়েছে, গড় আয়ু বেড়েছে। আমাদের জনগণের প্রতি বিশ্বাস আছে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের এ ভিসানীতি আমাদের অবস্থানকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

আব্দুল মোমেন আরও বলেন, আমরা একটি স্বচ্ছ নির্বাচন চাই, যা হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বদ্ধপরিকর। এ জন্য যত ধরনের প্রক্রিয়া দরকার, তা করা হচ্ছে। যাতে কারচুপির ভোট না হয়, সে জন্য ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র করা হয়েছে। কেউ কেউ রাতের অন্ধকারে ভোট হওয়ার কথা বলছে, সে কারণে আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স করেছি। আমরা একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারি দল, বিরোধী দল ও সুশীল সমাজসহ প্রত্যেকের সহযোগিতাও দরকার বলে যোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৪ মে) রাতে এক টুইটবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের বিষয়ে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।ব্লিঙ্কেন বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারায় একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এ নীতির অধীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য যারা দায়ী বা জড়িত থাকবে, সেসব বাংলাদেশির ভিসা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

এর আওতায় বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।