মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই সাবমেরিন চালক খুঁজছে কোম্পানিটি

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে নিজেই ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে পর্যটকবাহী ছোট সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ। এটির নাম ছিলো ‘টাইটান সাবমার্সিবল’। এই সাবমেরিনে পাঁচজন ব্যক্তি উঠতে পারেন।

টাইটানিক দেখতে গিয়ে সলিল সমাধি হয়েছে ‘টাইটানের’ পাইলটসহ পাঁচ আরোহীর, যাদের মধ্যে ছিলেন সাবমেরিনটির মালিক ওশানগেটের প্রধান নির্বাহীও। অথচ সেই শোক কাটতে না কাটতেই নতুন সাবমেরিন-চালকের খোঁজে কোম্পানিটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বলতে গেলে ওই পাঁচ আরোহীর মৃত্যুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার আগেই প্রচার করা হচ্ছে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। খরব নিউইয়র্ক পোস্ট’র।

শুক্রবার (২৪) থেকে ওশানগেটের ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পরে কোম্পানির ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ওয়েব্যাক মেশিন আর্কাইভে এখনও দেখা যাচ্ছে বিজ্ঞপ্তিটি।

বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মনুষ্যচালিত সাবমেরিন এবং সহায়তা জাহাজের বহর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় সাহায্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে একজন সাবমার্সিবল পাইলট বা মেরিন টেকনিশিয়ান চায় ওশানগেট।

আমরা দৃঢ় যান্ত্রিক ও আন্তঃব্যক্তিগত দক্ষতার সংমিশ্রণে একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যোগ্য ব্যক্তি খুঁজছি, যিনি সংবেদনশীল সামুদ্রিক সরঞ্জামগুলোতে কাজ করতে, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে এবং ডাইভ অপারেশনকে সমর্থনের জন্য জটিল সিস্টেমগুলো পরিচালনা করতে পারবেন।

চাকরির যোগ্যতা হিসেবে ‘প্রয়োজন অনুসারে কয়েক সপ্তাহ সমুদ্রে কাজ করার ইচ্ছা এবং ক্ষমতা’ থাকার পাশাপাশি ছোট নৌকা চালানো এবং বড় বাণিজ্যিক জাহাজে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যোগ্য ব্যক্তি আকর্ষণীয় বেতন, মেডিকেল প্যাকেজসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

Nagad

অথচ তখনও আটলান্টিকের তলদেশে নিখোঁজ সাবমেরিনটির সন্ধানে অভিযান চলছিল মার্কিন কোস্ট গার্ডের।

ওশানগেটের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারের পর ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। ওই বিজ্ঞাপনের বিষয়ে টুইটারে একব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, এটি ভয়াবহ। আরেকজন লিখেছেন, এখন লোক নিয়োগ দিচ্ছে? এদের (ওশানগেট) চিরতরেই বন্ধ করে দেওয়া দরকার।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিখোঁজ ‘টাইটান সাবমার্সিবল’ নামক সাবমেরিনটিতে পাঁচজন পর্যটক ছিলেন। নিখোঁজ ওই সাবমেরিনে থাকা যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন ৫৮ বছর বয়সী ব্রিটিশ ধনকুবের ব্যবসায়ী এবং অভিযাত্রী হ্যামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) এবং তার ছেলে সুলেমান (১৯)। এছাড়া ফরাসি অভিযাত্রী পল-হেনরি নার্গেওলে (৭৭) এবং ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশ(৬১) ও ডুবোযানটিতে ছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।

চলতি সপ্তাহেই সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে মি. হার্ডিং জানান, অবশেষে তিনি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাচ্ছেন। সেই সাথে তিনি এও জানান, গত ৪০ বছরের মধ্যে নিউফাউন্ডল্যান্ডে চরম শীতের কারণে হয়তো টাইটানিকের ভগ্নাবশেষের কাছে এটাই এই বছরের প্রথম এবং একমাত্র মনুষ্যবাহী অভিযান হতে যাচ্ছে।

আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “চরম আবহাওয়ার মাঝখানে একটা সুযোগ পাওয়া গেছে এবং আমরা আগামীকাল সাগরে ডুব দিতে পারি।”

যেসব সরকারি সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠান এই উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করছে, তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে ওশেনগেট। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এই বছরে একটি অভিযান চলছে আর সামনের বছর আরও দুটি অভিযান হওয়ার কথা রয়েছে।

সারাদিন/২৪ জুন/এমবি