সাংবাদিকরা চাইলে কিস্তিতে সরকারি ফ্ল্যাট কিনতে পারবে: প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৩

ফাইল ছবি

সাংবাদিকরা চাইলে কিস্তিতে সরকারি ফ্ল্যাট কিনতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ন্যাম সম্মেলনের জন্য যখন আমরা ফ্ল্যাট তৈরি করি। তখনই আমার একটা লক্ষ্য ছিল যে, সম্মেলনটা হওয়ার পর ফ্ল্যাটগুলো আমরা আমাদের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। আসলে তাদের চাকরির তো কোনো স্থায়িত্ব থাকে না। তারা যখন বয়োবৃদ্ধ বা অসুস্থ হয়ে যায় তখন কী করে চলবে, তার নির্দিষ্ট কোনো সুযোগই থাকে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরি যারা করে তারা তো অবসর ভাতা পায়। আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্যও যেমন কিছু থাকে না তেমনি সাংবাদিকদের জন্যও কিছু থাকে না। এটাই হলো বাস্তবতা। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাদের জন্য ঠিক আছে। কিন্তু আমরা কীভাবে চলব, কোথায় থাকব? এখন গণভবনে আছি ভালো কথা। এখান থেকে গিয়ে উঠবো কোথায়? সেই জায়গাটাও তো নেই।

সোমবার (১০ জুলাই) অসুস্থ, অসচ্ছল এবং দুর্ঘটনা আহত ও নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মীদের ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনা হবে । বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থা করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ রয়েছেন, যারা ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুই করেন না। অবসরের পর তারা কীভাবে চলবে সেটাও চিন্তার বিষয়। তাই সাংবাদিকরা যাতে কিস্তিতে ফ্ল্যাট কিনতে পারে সে বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। তাছাড়া ইলেক্ট্রনিক মিডায়ার কর্মীদের ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনা হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করার সময় সংবাদপত্র ছিল হাতেগোনা কয়েকটি। তখন অবাধে সংবাদ যাতে প্রকাশিত হতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। প্রথমে তিনটি প্রাইভেট চ্যানেলের অনুমতি দিয়েছি, তারপর এটি বাড়ানো হয়েছে। সেই সময় অনেকে বাধা দিয়েছিল যে, প্রাইভেটে টিভি চ্যানেল দেওয়া ঠিক হবে কি না? আমি যখনই যে কাজ করেছি সেখানে লক্ষ্য ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তখন আমি বলেছিলাম, যত বেশি টেলিভিশন দিতে পারব সেখানে সাংবাদিক থেকে শুরু করে বহু ধরনের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সাংবাদিক, শিল্পী, টেকনিশিয়ানসহ বহু ধরনের মানুষ কাজ পাবে তাদের জীবন চলতে পারবে। সেভাবে আমরা টেলিভিশনটা উন্মুক্ত করে দেই।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংবাদপত্রকে বলে সমাজের দর্পণ। বাস্তবে তাই। এই সংবাদপত্র দেখলেই অনেক তথ্য পাওয়া যায়। আমি নিয়মিত শুধু পড়িই না, কোন সমস্যা দেখলে তার ছবি তুলে আমার অফিসের কার কাছে পাঠালে কাজ হবে তার কাছে পাঠিয়ে দেই। সংবাদপত্র থেকে এই সংবাদগুলো পাওয়া যায়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সহজ হয়।

Nagad

তিনি বলেন, যাই হোক আমি নিজের জন্য চিন্তা করি না। কিন্তু আমি সবার জন্য ভাবি। আমি আপনাদের বলব, আপনারা সাংবাদিকরা যদি সরকারি ফ্ল্যাট কিনতে চান। যেগুলো আমরা তৈরি করছি এবং বিক্রি করছি। তাহলে কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করে কিনতে পারবেন। প্রথমে সামান্য কিছু (টাকা) দিলে। বাকিটা কিস্তিতে দেওয়া যাবে। আমরা সেই ব্যবস্থাটা করে দিচ্ছি।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা যখন সরকার গঠন করি। তখন দেশে শুধু একটি টেলিভিশন ছিল। সেটিও সরকারি টেলিভিশন। আমরা তো আবার ভুলে যাই। ছয় ঋতুর দেশ, ঋতুও বদলায়, মনও বদলায়, স্মৃতিশক্তিও লোপ পায়। তখন সংবাদপত্র ছিল মাত্র কয়েকটি। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক সংবাদপত্র অফিস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দিয়েছিল। জাতির পিতা সমস্ত সাংবাদিকদের সরকারি চাকরির মর্যাদা দিয়েছিলেন এবং চাকরির সুযোগও করে দিয়েছিলেন। জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল এ দেশের মানুষের যেন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকে।