‘বিপিও খাতের অবস্থান তুলে ধরতে পঞ্চম বিপিও সামিট আয়োজন প্রশংসনীয়’

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৩

বিপিও খাতের অবস্থান তুলে ধরতে পঞ্চম বিপিও সামিট আয়োজন প্রশংসনীয়-বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, আইটি বাংলাদেশের একটি উদীয়মান খাত। এ খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বিরল গৌরব বয়ে এনেছে। আইটি বাংলাদেশের একটি উদীয়মান খাত। এই খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বিরল গৌরব বয়ে নিয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব কন্টাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) আইটির সার্ভিস সেন্টার হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে।

শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটলে বক্কো’র উদ্যোগে ‘সোর্সিং বিয়ন্ড বর্ডার্স’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত পঞ্চম বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিপিও-তে নারীদের সুযোগ করে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে স্পিকার বলেন, ঘরে বসেই নারীরা এই পেশায় আসতে পারে। তাদের মেধা-শ্রম দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আউটসোর্সিং পুল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এআই বিশ্বজুড়েই আলোচিত ও বাস্তবতা। এটা আগামীতে আমাদের নানা ভাবে প্রভাবিত করবে। তবে এর পেছনে রয়েছে একজন মানুষ। তাই মানুষের প্রয়োজন কোনো দিনই ফুরাবে না। এআই আমাদের কাজ খেয়ে ফেলবে না। তাদেরকে এই মানুষরাই সৃষ্টি করবে। তাই নতুন দক্ষতা উন্নয়নে সর্বশেষ প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাই কোনো কোন ক্ষেত্রে এই রূপান্তরে মনযোগী হতে হবে।

স্পিকার বলেন, দেশের তরুণ মেধাবীদের সম্পৃক্ত করতে হলে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে কার্যক্রম বিস্তৃত করতে হবে। সাধারণ মানুষের কাছে বিপিও’র সহজবোধ্য উপস্থাপন জরুরি। বিপিও থেকে দেশ ও জাতি কীভাবে লাভবান হতে পারে তা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

কৃষিতে টেকনোলজি চলে এসেছে জানিয়ে স্পিকার বলেন, ধান কাটার জন্য এখন আর মানুষ পাওয়া যায় না। সেখানে মেশিনের মাধ্যমে এখন ধান কাটার ব্যবস্থা হচ্ছে। যেক্ষেত্রেই সংকট সেখানে আপনি টেকনোলজির উপর নির্ভর করছেন। আবার অনেক ক্ষেত্র আছে-যেখানে জনবল আছে, টেকনোলজি সেটা টেকওভার করছে; সেখাই সেই জনবলকে অন্যক্ষেত্রে শিফট করতে হবে। তাকে সেই দক্ষতা বা স্কিল দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

Nagad
ছবি: সারাদিন ডট নিউজ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যত স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলতে হলে স্মার্ট কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই। এ জন্য সাইবার সিকিউরিটি, চিপ ডিজাইনিং, ব্লকচেইন, এআই এর মতো ভবিষ্যত প্রযুক্তিতে ১ লাখ দক্ষকর্মী গড়ে তুলতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট মহাসড়ক প্রস্তুত করেছে। বিদ্যুতের সমস্যারও সমাধান হয়েছে। এর ফলে বিপিও খাতে ২০ লাখ কর্মসংস্থান সম্ভব হয়েছে। গত ৫-১০ বছরে যতগুলো হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক থেকে বড় অংকের রপ্তানি আয় করা সম্ভব হচ্ছে। এখন দেশের ৫৭ বিশ্ববিদ্যালয়েই গবেষণা ও উদ্ভাবন ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সহসাই আইএসপিএবি’র মাধ্যমে মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করতে পারবো।

পলক বলেন, রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে স্মার্ট নাগরিক তৈরি করতে সনদ থেকে কর্মমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করছি। প্রাথমিকে কোডিং শেখানোর মাধ্যমে সরকার এখন প্রবলেম সলভার তৈরি করছে।

বিপিও খাত গড়ে তোলার জন্য সবার আগে দরকার ইন্টারনেট জানিয়ে পলক বলেন, আমরা সারা দেশে ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। প্রতিটি ঘরে বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। বিপিও খাতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ। সারা দেশে ৭ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০ লাখ তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে সরকার। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেবে। তরুণদের দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা ১০০ কোটি ডলার আয় করতে চাই।

অনুষ্ঠানে বিপিও সামিটের আয়োজক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনটাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং বাক্কোর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বক্তব্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি সচিব সামসুল আরেফিন, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মোস্তফা কামাল ও বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বক্তৃতা করেন।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কনট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর উদ্যোগে পুরো আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল। এবারের সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো রাজধানী ঢাকার বাইরের প্রতিটি বিভাগেই দুই দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভাগীয় সম্মেলন। এরমধ্যে রাজশাহী বিভাগের সম্মেলন হয়েছিলো নাটোর জেলায় এবং খুলনা বিভাগের সামিট হয়েছিলো যশোর জেলায়।

অনুষ্ঠানের প্ল্যাটিনাম স্পন্সর আয়েশা সার্ভিসেস লিমিটেড (এএসএল বিপিও), এডিএন টেলিকম লিমিটেড, জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড এবং সিনার্জি সলিউশানস। গোল্ড ক্যাটাগরিতে স্পন্সর হিসেবে আছে মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেড, উইজডম ভ্যালি লিমিটেড এবং সিলভার ক্যাটাগরির স্পন্সর হিসেবে আছে ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, স্কাইটেক সলিউশানস এবং পেয়োনিয়ার। সেমিনার স্পন্সর হিসেবে আছে এনহ্যানসিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট এন্ড ইকোনমি (এজ), দ্যা কাউ কোম্পানি লিমিটেড, বিটিআরসি। নলেজ পার্টনার-সিওপিসি ইনকর্পোরেটেড; অ্যাসোসিয়েট পার্টনার হিসেবে আছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), উইম্যান অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই), বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ), টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি), ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএফডিএস) এবং বাংলাদেশ উইম্যান ইন টেকনোলজি (বিডাব্লিউআইটি) এবং নিজের বলার মত একটা গল্প ফাউন্ডেশন। লাইভ টেলিকাস্ট পার্টনার হিসেবে আছে ঢাকা লাইভ।

এসময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাদিন/ ২২ জুলাই/ আরএ