কম্বোডিয়ার একতরফা নির্বাচন, বিজয়ী ঘোষণা করল ক্ষমতাসীন দল

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২৩

৩৮ বছর ধরে ক্ষমতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। তিনি, ২০২৩ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করিয়েছেন। শক্তিশালী কোনো বিরোধী দল ছাড়াই এই ক্যাম্বোডিয়ার ‘একতরফা’ জাতীয় নির্বাচনে বড় জয় দাবি করেছে দেশটির দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী।

ক্ষমতায় থাকা হুন সেনের কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি) সহজ জয় পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল অনেক আগে থেকেই। এ নির্বাচনে সিপিপির কার্যত কোনো বিরোধী ছিল না। দলটির মুখপাত্র সোক ইসান বলেন, ‘আমরা ভূমিধস বিজয় পেয়েছি…তবে আসনসংখ্যা এখনও গণনা করতে পারিনি।’

দলটি ১২৫ আসনের পার্লামেন্টে কতটি আসন পেতে চলেছে সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া না গেলেও তারা সবগুলো আসনেই জয়লাভের আশা প্রকাশ করেছে।

রোববারের নির্বাচনকে কম্বোডিয়ার ইতিহাসে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক বলা হচ্ছে। এই সমালোচনার অন্যতম কারণ দেশটির প্রধান বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে করা হচ্ছে এ নির্বাচন।

কম্বোডিয়ার দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন দল সিপিপির পাশাপাশি ১৭টি ছোট দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে সিপিপিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো সক্ষমতা এই ১৭ দলের কোনোটিরই নেই।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোও ক্যাম্বডিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জনগণকে যেখানে প্রার্থী বাছাইয়েরই সুয়োগ দেওয়া হচ্ছে না, সেখানে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ভোট নিশ্চিত করতে সরকার নির্বাচন বর্জন বা ব্যালট পেপার নষ্ট করার কোনওরকম চেষ্টাকে অপরাধ বলে ঘোষণা করেছে।

এবছর বিরোধী আইনপ্রণেতারা তাদের ওপর সহিংস হামলার খবর জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক বিরোধীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, নির্বিচারে গ্রেপ্তারও করছে।

Nagad

কম্বোডিয়ার নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুসারে, দেশটিতে ভোট দেওয়ার যোগ্য ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯৭ লাখ। কম্বোডিয়ায় সিপিপির প্রধান প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেললাইট পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। কারণ নিবন্ধন-সংক্রান্ত ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে গত মে মাসে এই দলকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

এর আগে ২০১৮ সালে হুন সেন যখন প্রধানমন্ত্রী হন, তখনও সুকৌশলে বিরোধী দলকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা হয়েছিল। ওই সময়ের জনপ্রিয় প্রধান বিরোধী দল কম্বোডিয়া ন্যাশনাল রেসকিউ পার্টিকেও তখন আদালতের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

এদিকে , ক্যাম্বোডিয়ায় অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করার মধ্যে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। স্থানীয় মানুষেরা বাড়তে থাকা ঋণ, বেতন না বাড়া এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়ে সংগ্রামের মধ্যে থাকার অভিযোগ জানাচ্ছে।