এমএলএম কোম্পানিগুলোর মূল পুঁজি মানুষের ‘লোভ’, বিভিন্ন রূপে আসে
এমএলএম বা মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং এর বাংলা পরিভাষা হচ্ছে বহুমুখী পণ্য বিপণন পদ্ধতি। মূলত মধ্যস্বত্ত্বভুগীদের বাদ রেখে সরাসরি কাস্টমারের কাছে পণ্য বিক্রয় করে এর লাভের একটা অংশ পুনরায় ক্রেতার কাছে ফেরত দেওয়ার জন্যই এমএলএম এর জন্ম হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়টিকে নানা রঙ দিয়ে, নিত্য নতুন আইডিয়া যোগ করে, ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ঠকানো হচ্ছে মানুষকে।
ভিন্ন রূপে আসা এ কোম্পানিগুলো সাধারণ মানুষকে অল্প সময়ে বেশি মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এই এমএলএম কোম্পানি গুলো বিপুল পরিমাণে টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশে নতুন নয়; এর আগে,
যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপেটুইউ, ইকমার্সের নামের এই পদ্ধতি ব্যবহার করা ইভ্যালি-র মতো প্রতিষ্ঠান। যাদের বিরুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
এ ধরণের জালিয়াতি থেকে বাঁচতে কিছু ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন,
বিশ্লেষকদের মতে, এই কোম্পানিগুলোর মূল পুঁজি মানুষের ‘লোভ’। কোম্পানিগুলো অল্প সময়ে অধিক লাভের উপায় দেখানোয় ব্যাপক সংখ্যক মানুষ এইসব ব্যবসায় যোগ দিচ্ছে এবং অপরকে যোগ দিতে উৎসাহিত করছে।
কিছুদিন আগে হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছে মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ সংক্ষেপে এমটিএফই নামে একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি। যারা দুবাইতে বসে অনলাইনে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এখানে মূলত বিনিয়োগকারীদের উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলানো হয়। সেই লাখ লাখ বাংলাদেশিকে নিজ নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে অধিক মুনাফা পেতে বিনিয়োগ করতে বলা হয়। কিন্তু গ্রাহকরা বিনিয়োগ করা টাকা শেষ পর্যন্ত আর তুলতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এই কোম্পানিগুলো অ্যানালগ পদ্ধতি থেকে এখন ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের প্রতারণার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এখন আর পণ্য বিক্রি, প্রশিক্ষণ বা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির কথা বলে নয় বরং রিয়েল এস্টেট, শেয়ার বাজার, ট্যুর ও আবাসিক হোটেল সেবায় বিনিয়োগের মাধ্যমে অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ আর্থিক মুনাফার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
কখনও ই-কমার্সের নামে, আর্থিক সমবায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে, আবাসনসহ নানা ব্যবসার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এর আড়ালে অভিনব কৌশলে চালাচ্ছে এর এমএলএম ব্যবসা। যার প্রলোভনে হুমড়ি খেয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো টাকা হাতিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার পর আজ পর্যন্ত কোন টাকা উদ্ধার করা যায়নি।
সারাদিন. ২৩ আগস্ট