ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যয় ৪০০ কোটি, রোগীপ্রতি ৫০ হাজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৩

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সংগৃহীত ছবি

চলতি বছর ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসায় সরকারের ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, রোগীপ্রতি সরকারের গড়ে ব্যয় হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া এখন পর্যন্ত হাসপাতালে সেবা নেওয়া মোট রোগীর ৭০ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

রোববার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই শত শত মানুষ এডিস মশাবাহিত এই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রাণহানির তালিকাটা বড় হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এতে চলতি মৌসুমে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। দেশের ৭০ শতাংশ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন সরকারি হাসপাতালে। আর বাকি ৩০ শতাংশ বেসরকারি হাসপাতালে।

তিনি বলেন, সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। অনেকের প্লাটিলেট ও আইসিইউ প্রয়োজন হয়। আবার অনেকে শুধু ওষুধেই সুস্থ হচ্ছেন। এবছর ইতোমধ্যে ৫৩৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যাও লাখ ছাড়িয়েছে। এখনও প্রতিদিন শত শত মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে খুব বেশি কাজে আসছে না।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমন্বয়হীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন ও চিকিৎসা নিয়ে এখানে কাজ করছি, কাউকে দোষারোপ করার জন্য নয়। আমরা কাউকে দোষ দিচ্ছি না। ডেঙ্গু সুরক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়। স্থানীয় সরকার, পরিবেশসহ অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব রয়েছে।’

জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘ডেঙ্গুতে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হলেও নারীদের বেশি মৃত্যু হচ্ছে। মোট মৃত্যুর ৬৫ ভাগই নারী। চিকিৎসার প্রতি অবহেলার কারণে তাদের মৃত্যুহার বেশি। তাই নারীদের চিকিৎসার প্রতি আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। যারা দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসছেন, তারাই বেশি মারা যাচ্ছেন। পাশাপাশি যারা একাধিকবার আক্রান্ত হন, তাদের মৃত্যুহার বেশি।’

Nagad

এডিশ মশা নির্মূলে সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত ওষুধের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, মশা নিধনে যেভাবে ডোবা-নালায় স্প্রে হওয়া দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। স্কুলেও অনেক বাচ্চা আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু সেখানে ঠিকমতো মশা নিধনের স্প্রে হচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। পাশাপাশি কল কারখানায় যাতে নিয়মিত স্প্রে হয়, সেটি তদারকি করতে হবে। যেসব মশা জন্মাচ্ছে, সেগুলো নিয়েও গবেষণা হওয়া দরকার।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, মানুষের আচরণগত পরিবর্তন অনেক কঠিন কাজ। পাশাপাশি লজিস্টিক সাপোর্ট। সরকারি প্রতিষ্ঠানে সবসময়ই কিছু ঘাটতি থাকে, সেটা মোকাবেলা করার চেষ্টা চলছে। সময়মত মশা নিধন, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো না গেলে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়।