ঝিনাইদহে ল্যাম্পিস্কীন রোগে অন্তত ৫০ হাজার গরু-বাছুর আক্রান্ত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৫:১৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৩

ঝিনাইদহ জেলায় গরু বাছুরের ল্যাম্ফিস্কীন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মৃত্যুর খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তবে এপর্যন্ত কত গরু আক্রান্ত হয়েছে, তার কোন তথ্য জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে নেই। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় এপর্যন্ত আনুমানিক ৫০ হাজার গরু বাছুর আক্রান্ত হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেন, কিছু বাছুর মারা গেছে। তার সংখ্যা বলতে পারেননি। ল্যাম্ফিস্কীনের পাশাপাশি গরুর খুরা রোগের প্রকোপও শুরু হয়েছে ।

খামারিদের কাছ থেকে জানা যায়, মাস তিনেক আগে গরু বাছুরের পচন ( ল্যাম্ফিস্কীন) রোগ দেখা দেয়। আস্তে আস্তে এরোগ এক গোয়াল থেকে অন্য গোয়ালে ছড়াচ্ছে। তারা জানায়, প্রথমে গরুর জ্বর আসে। এরপর গলা ফুলে যায় এবং সারা শরীরে ফোড়া বের হয়। গরু কাতর হয়ে পড়ে। কয়েক দিনের মধ্যে ফোড়া ফেটে গর্ত হয়ে পুঁজ রক্ত বের হয়। বেশি সংখ্যক ফোড়া হলে গরু মারা যায়। বিশেষ করে বাছুর গরু।

আজ মঙ্গলবার শৈলকুপা পশু হাসপাতালে একটি বাছুর গরু নিয়ে আসে বিজুলিয়া গ্রামের আকমল। তিনি জানান, বাছুরটির প্রথমে জ্বর আসে। এরপর সারা শরীরে ফোড়া বের হয়। তার একটি সদ্যজাত বাছুর মারা গেছে।

একই উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের আসাদুল ইসলাম জানান, তার একটি গরুর এক মাস আগে জ্বর আসে। তারপর সারা শরীকে ফোড়া বের হয়। ফোড়া গুলো ফেটে পচন ধরছে, দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। গ্রামে আরো অনেকের গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাদের গ্রামে ৩টি গরু মারা গেছে। ল্যাম্পিস্কীনের পাশাপাশি খুরা রোগ শুরু হয়েছে।

এ গ্রামের মানিক মণ্ডল বলেন, তার গরুর খুরা রোগ হয়েছে। গরু খেতে পারছে না।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার চ্যাটার্জি জানান, কয়েক মাস আগে ল্যাম্পিস্কীন ডিজিজ শুরু হয়েছে। এটি ভাইরাস বাহিত রোগ। মশা মাছি এ রোগের বাহক। মশা রোগাক্রান্ত গরু কামড়ে আবার সুস্থ গরুকে কামড় দিলে সুস্থ গরু সংক্রমিত হয়। এ রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন আমাদের দেশে বের হয়নি। গোটপক্সের ভ্যাকসিন প্রতিরোধক হিসাবে দেওয়া হচ্ছে। তাও চাহিদা মত সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না।

Nagad

তিনি অবশ্য বলেন, সঠিক সংখ্যা বলা না গেলেও ৫০ হাজার গরু-বাছুর ল্যাম্পিস্কীন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বাছুর মৃত্যুর খবর জানা গেলেও সংখ্যা বলা সম্ভব নয়।

সিনিয়র ভেটেরিনারীয়ান মেজর (অব:) ডা: মুহা: মেহেরুল হাসান জানান, এটি গরু, মহিষের জন্য ভয়ংকর ভাইরাস জনিত রোগ। রোগটি প্রধানত বর্ষার শেষে, শরতের শুরুতে বা বসন্তের শুরুতে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। কারণ- বছরের এই সময়গুলোতে মশা, মাছি অধিক বিস্তার লাভ করে। মশা, মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। যেকোনো বয়সী পশু এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

সারাদিন. ২৯ আগস্ট. আরএ