ড. ইউনূসের পক্ষে বিদেশিদের চিঠির প্রতিবাদে ৫০ সম্পাদকের বিবৃতি

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩

দেশের ৫০ জন বিশিষ্ট সম্পাদক এক যৌথ বিবৃতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিদেশিদের খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা এই চিঠিকে ‘স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

বিবৃতিতে সম্পাদকরা বলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট কয়েকজন নোবেল বিজয়ী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সম্মানিত সদস্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া একটি খোলা চিঠিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’

বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন উল্লেখ করে সম্পাদকরা বলেন, ‘এ ধরনের চিঠি প্রদানের মাধ্যমে তারা (বিদেশিরা) অনৈতিক, বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করেছেন বলে আমরা মনে করি।’

সম্পাদকরা আরও বলেন, ‘এ ধরনের বিবৃতি বা খোলা চিঠি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বাংলাদেশের আইনে শ্রমিকদের প্রদত্ত অধিকার সংক্রান্ত বিধানাবলীর সম্পূর্ণ পরিপন্থি। আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত ও নোবেল বিজয়ীদের এ ধরনের বিবৃতি ও চিঠি অনাকাঙ্ক্ষিত-অনৈতিক। একজন অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না এবং বিচার করা যাবে না—এমন দাবি ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পরিপন্থি।’

সম্পাদকদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, তারা (বিদেশিরা) মামলা সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে এমন দাবি করেছেন। তাই আমরা তাদেরকে অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে মামলায় ড. ইউনূসকে আদৌ হয়রানি করা হচ্ছে কি না, তা তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।’

বিবৃতিতে সম্পাদকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশিদের যে আহ্বান জানিয়েছেন, তার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, ‘একই চিঠিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে, তা স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ যেকোনো মহলের এ ধরনের অবমাননাকর, অযাচিত ও বেআইনি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’

Nagad

সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা ও শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানান এই ৫০ সম্পাদক।

বিবৃতিদাতা সম্পাদকদের মধ্যে রয়েছেন—ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, আজকের পত্রিকার গোলাম রহমান, ইত্তেফাকের তাসমিমা হোসেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সমকাল সম্পাদক আলমগীর হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, ইউএনবির ফরিদ হোসেন ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।