চুমুকাণ্ডে অবশেষে পদত্যাগ করলেন লুইস রুবিয়ালেস

খেলাধুলা ডেস্কখেলাধুলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে চুমুকাণ্ডের ঘটনায় অবশেষে পদত্যাগ করলেন স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি লুইস রুবিয়ালেস। আরএফইএফ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পেদ্রো রোচার কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

ব্রিটিশ সাংবাদিক পিয়ার্স মরগানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্প্যানিশ ফুটবলের পদ থেকে পদত্যাগ করার কথা জানিয়েছেন রুবিয়ালেস।

তিনি বলেন, “আমি আমার কাজ চালিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” এ সময় রুবিয়ালেস ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পেদ্রো রোচার কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। একইসাথে উয়েফার নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতির পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন লুইস রুবিয়ালেস।

প্রথমে পদত্যাগ করতে না চাইলেও এখন পদত্যাগ করার কারণ জানিয়ে লুইস রুবিয়ালেস বলেন, “আমার বাবা এবং মেয়েদের সাথে আমি কথা বলেছি। তারা জানে, বিষয়টা আমাকে নিয়ে নয়। আর কিছু বন্ধুও বলেছে, ‘লুইস তোমার নিজের মর্যাদার ওপর মনোযোগ দেওয়া দরকার এবং নিজের জীবন চালিয়ে নেওয়া দরকার। যদি তা-না হয় তবে তুমি ভালোবাসার মানুষদের এবং যে খেলাটিকে ভালোবাসো তার ক্ষতি করবে।’ বিষয়টা তাই শুধু আমাকে নিয়ে নয়।”

লুইস রুবিয়ালেস আরও বলেন, “আমার নিজের সত্যের ওপর আস্থা আছে এবং জেতার জন্য আমি নিজের শক্তি অনুযায়ী সবকিছু করব। আমার মেয়ে, পরিবার এবং যারা আমাকে ভালোবাসে, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

উল্লেখ্য, গত আগস্টে সিডনিতে হাইভোল্টেজ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো নারী ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে মঞ্চে নারী ফুটবলারদের জড়িয়ে ধরে চুমু দিচ্ছিলেন স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লুইস রুবিয়ালেস।

Nagad

এখানেই শেষ নয়, নারী ফুটবলার জেনিফার হারমোসোকে ঠোঁটে চুমু খেলে চারদিক থেকেই সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হচ্ছেন লুইস রুবিয়ালস। মুহূর্তেই এই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এনিয়ে শুরুতে আত্মপক্ষ সমর্থন করলেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চেয়েছেন রুবিয়ালেস। কিন্তু তা গ্রহণ করেনি ফিফা। রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ফিফা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিজেই জানান, দায়িত্বশীল পদে থেকে এই রকম আচরণ করা ঠিক হয়নি তার। রুবিয়ালেস ভাষ্য, “আমাকে স্বীকার করতেই হবে, আমি সম্পূর্ণ ভুল ছিলাম। আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমাকে বুঝতে হবে, যখন সভাপতি সভাপতির মতো দায়িত্বে থাকবেন, আপনাকে আরও সতর্ক হতে হবে।”

যদিও শুরুতে নিজের অপরাধ স্বীকার করেননি রুবিয়ালেস। স্প্যানিশ রেডিও মার্কায় নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছিলেন, “হেনির সাথে চুমু? মূর্খ লোকের তো অভাব নেই। দুইজন মানুষের স্নেহপূর্ণ মুহূর্ত নিয়ে এসব মূর্খের কথা শোনার সময় নেই। আমরা চ্যাম্পিয়ন, আমি এটা নিয়েই আছি।”

বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে চুমু দৃশ্যের সংবাদটি প্রকাশ করেছে দুই স্প্যানিশ গণমাধ্যম মুন্দো দেপার্তিভো ও এস্তাদিও দেপার্তিভো। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, অন্যদের তুলনায় হারমোসোকে দীর্ঘ সময় আলিঙ্গন করেন রুবিয়ালেস। দুহাতে জড়িয়ে উঁচুতেও তুলে ধরেন। একে অপরের সাথে কথাও বলেন। একপর্যায়ে হারমোসোকে জাপটে ধরে ঠোটে চুমু খান রুবিয়ালেস।

এই বিষয়টি যে হারমোসোর মোটেও পছন্দ হয়নি সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রাম লাইভে এসে জানিয়েছেন তিনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হারমোসো বলেন, “আমার এটা বিন্দুমাত্র পছন্দ হয়নি।”

সারাদিন/১১ সেপ্টেম্বর/এমবি