চিলিতে ভয়াবহ দাবানলে নিহত বেড়ে ১১২, শত শত নিখোঁজ
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে ভয়াবহ দাবানলে নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই। দেশটির ভালপারাইসো অঞ্চলে দাবানলে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। এছাড়া এখনও শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।


নিহতদের মধ্যে ৩২ জনকে এখন পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া দেশজুড়ে এখনও প্রায় ৪০টির মতো দাবানল সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে।
এখন পর্যন্ত চিলিতে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই গ্রীষ্মের ছুটিতে উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ভালপারাইসোতে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মধ্য চিলিতে প্রায় ১০ লাখ মানুষের বাসস্থান ভালপারাইসো অঞ্চলের অনেক অংশে কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে গেছে। দমকলকর্মীরা হেলিকপ্টার ও ট্রাক ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
বিবিসি বলছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইলেকটিভ সার্জারি স্থগিত করার এবং অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের অনুমোদনও দিয়েছে। মন্ত্রণালয় একই বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করার জন্য পড়াশোনার শেষের দিকে থাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীদেরও কাজে লাগানো হবে।
এদিকে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর উদ্ধার পরিষেবাগুলো সবচেয়ে খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য লড়াই করছে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা বলেছেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃতের সংখ্যা ‘অনেক বেশি বাড়বে’।
এই পরিস্থিতিতে চিলির সরকার জনগণকে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছে। এল অলিভারের ৬১ বছর বয়সী এক বাসিন্দা এই দাবানলকে ‘নরক’ বলে বর্ণনা করেছেন।
সেখানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দাবনলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় শহর ভিনা ডেল মার। সবজায়গায় পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা জানিয়েছেন, ২০১০ সালের ভূমিকম্পের পর সবচেয়ে বড় দুর্যোগের মুখোমুখি তার দেশ। ওই ভূম্পিকম্পে প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়। গত শুক্রবার চিলিতে দাবানলের সূত্রপাত হয়। এরপর থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যারোলিনা তোহা জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় লোকজনকে ভ্রমণ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে চিলি সরকার।