সরকারের নির্দেশনা না মানলে কঠোর শাস্তি, হুঁশিয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৯:০৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, “এখন থেকে সরকারের নির্দিষ্ট শর্ত মেনে বেসরকারি মেডিকেল/ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাতে হবে। এর কারন, আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু অসাধু মানুষ সরকারের কোনরকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য যত্রতত্র নামমাত্র হাসপাতাল/ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।

নিয়মের বাইরে গিয়ে এগুলো আর চলতে পারবে না জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন- এখনো ১২০০ টির উপর প্রাইভেট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিবন্ধন নাই। এদের কাছে ভালো ডাক্তার নাই, নার্স নাই, টেকনিশিয়ান নাই। তাহলে এরা হাসপাতাল চালাচ্ছে কী দিয়ে? এরা রোগী পাচ্ছে কীভাবে? এগুলো আমাদেরকে ভাবতে হবে। আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, ইতোমধ্যেই এরকম প্রায় ১০০০ টি অনিবন্ধিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং এরকম অনিবন্ধিত অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোও বন্ধ করার কাজ চলমান রয়েছে। আর, আজকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে পরিচালক (প্রশাসন) কর্তৃক স্বাক্ষরিত দশটি বিশেষ নির্দেশনাসহ একটি অফিস আদেশ করে দিয়েছি। এই অফিস আদেশ প্রত্যেকটি প্রাইভেট মেডিকেল/ক্লিনিক/ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অবশ্যই মেনে হাসপাতাল চালাতে হবে। এটির অমান্য হলেই নিবন্ধন বাতিল সহ কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে।”

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট কর্তৃক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা সামন্ত লাল সেন এর নির্দেশে জারিকৃত ডাঃ আবু হোসেন মোঃ মঈনুল আহসান পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) কর্তৃক স্বাক্ষরিত বেসরকারি মেডিকেল/ক্লিনিক/ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পালনীয় শর্তাবলীর অফিস আদেশটি সকলের জ্ঞাতার্থে নিচে দেওয়া হলো:-

এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বেসরকারী হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার সমূহ পরিচালনার ক্ষেত্রে নিন্মে বর্ণিত শর্তাবলী আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলোঃ

(১) বেসরকারী ক্লিনিক/হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক এর লাইসেন্সের কপি উক্ত প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ পথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে;

Nagad

(২) সকল বেসরকারী স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষন ও সরবরাহের জন্য ০১ (এক) জন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা/কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে;
(৩) যে সকল প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে কিন্তু শুধুমাত্র ডায়াগনষ্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে তারা লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যতিরেকে কোনেভাবেই নামে উল্লেখিত সেবা প্রদান করতে পারবে না;
(৪) ডায়াগনষ্টিক সেন্টার/প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরী এর ক্ষেত্রে যে ক্যাটারগরীতে লাইসেন্স প্রাপ্ত শুধুমাত্র সে ক্যাটারগীতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত কোনভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না এবং ক্যাটারগরী অনুযায়ী প্যাথলজি/মাইক্রোবায়োলজি,বায়োকেমিষ্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে।
(৫) বেসরকারী ক্লিনিক/হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্স এর প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সকল শর্তাবলী বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে;
(৬) হাসপাতাল/ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিযোজিত সকল চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রীর সনদসমূহ, বিএমডিসি’র হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষন করতে হবে;
(৭) হাসপাতাল/ক্লিনিক এর ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারী/প্রসিডিউর এর জন্য অবশ্যই রেজিষ্ট্রার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে;
(৮) কোন অবস্থাতেই লাইসেন্স প্রাপ্ত/নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত চেম্বারে অথবা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে এ্যানেসথেশিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ (Anesthetist) ছাড়া যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারী/Interventional Procedure করা যাবে না;

(৯) সকল বেসরকারী নিবন্ধিত/লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে Labor Room Protocol অবশ্যই মেনে চলতে হবে;
(১০) নিবন্ধিত/লাইসেন্স প্রাপ্ত হাসপাতাল/ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই Operation Theatre Etiquette মেনে চলতে হবে।