‘বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনকারীরা কেউ পার পাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:২৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন- বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনকারীরা কেউ পার পাবে না। সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। দলীয় নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে। এর সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জড়িত।

তিনি বলেন, নির্যাতন চালিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না। এছাড়া, দলটির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন বন্ধেরও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন দলের পক্ষ থেকে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন- সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ঠান্ডামাথায় সুপরিকল্পতভাবে বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। রিজভী বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটে। মাত্র একদিনে এত সংখ্যক সেনা কর্মকর্তা হত্যার নজির বিশ্বের আর কোথাও নেই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে এতসংখ্যক সেনা কর্মকর্তাকে প্রাণ দিতে হয়নি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১৫ বছর পার হয়ে গেলেও এমন বর্বরোচিত ঘটনার আজ পর্যন্ত বিচার সম্পন্ন হয়নি। বরং বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় সেনা হত্যাযজ্ঞের দায়ে যাদের কারাগারে থাকার কথা ছিল তারাই এখন অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। অথচ বছরের পর বছর ধরে কারাগারে বিনা বিচারে মানবেতর জীবনযাপন করছে শত শত বিডিআর সেনা।

রিজভীর দাবি, ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন মানুষের বীভৎস হত্যাকাণ্ডের এই দিনটি অবশ্যই প্রতিবছর জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হওয়া উচিত ছিল। প্রতি বছর যেভাবে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়, উচিত ছিল দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার শপথ নিয়ে একইভাবে যথাযথ রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব সহকারে ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনটিও পালন করা। অথচ সচেতনভাবেই গুরুত্বহীন আর অবহেলায় বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহতম দিনটি প্রতিবছর প্রায় নীরবেই পার করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের ভয়াবহ এই দিনটিকে কেন যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছেনা? সংশয়-সন্দেহ-রহস্য এখানেই।

Nagad

সুপরিকল্পিত সেনা হত্যাযজ্ঞের পর বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এখন হুমকির সম্মুখীন। অস্তিত্ব সংকটে দেশ। অরক্ষিত দেশের সীমান্ত। দেশটাকে নিয়ে ভাগবাটোয়ারার হাট বসানো হয়েছে। ২০১৭ সালে থেকে আজ ২০২৪। এতো বছরে বাংলাদেশে আশ্রিত ১৩ লাখ রোহিঙ্গার একজনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি। অথচ গৃহযুদ্ধে লিপ্ত মিয়ানমার সামরিক জান্তার তিন শতাধিক সেনা কয়েকদিন আগে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার দুই তিনদিন পরই তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে, মিয়ানমারের তিন শতাধিক সেনা ফেরত পাঠানো গেলেও এত বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও কেন মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো যায়নি। ক্ষমতালিপ্সা কারণে স্বাধীন বাংলাদেশ মনে হয় এখন ‌‘ব্যানানা রিপাবলিকে’ পরিণত হয়েছে। সীমান্তে একের পর বাংলাদেশি নাগরিক খুন হচ্ছে। এমনকি বিজিবি সদস্য হত্যা হলেও বাংলাদেশ প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছে।

রিজভী আরও বলেন, সিন্ডিকেটের সঙ্গে কারা জড়িত, এটা সবাই জানে। সরকার নিজেরা কিছু না করে শুধু বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাতে ব্যস্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।