আজ প্রথিতযশা ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপার জন্মদিন
‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘তুমি আমার এমনই একজন’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, ‘তোমাকে চাই শুধু তোমাকে চাই’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী কনকচাঁপা। ১৯৬৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর অসংখ্য হিট গানের এ গায়িকার জন্ম হয়েছিল ঢাকায়। এই শহরেই বেড়ে ওঠা। যদিও কনকচাঁপাদের পৈতৃক বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে। তার বাবার নাম আজিজুল হক মোর্শেদ। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে কনকচাঁপা তৃতীয়।আজ ১১ সেপ্টেম্বর এই নন্দিত কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
কনকচাঁপা বলেন, জন্মদিনে আমার কখনোই নিজ উদ্যোগে কোনো বিশেষ আয়োজন করা হয় না। তবে মাঝেমধ্যে আমার স্কুলের শিক্ষার্থী, ভক্তরা বিশেষ আয়োজন করে ফেললে তখন অনেকটা নিরুপায় হয়েই তাতে অংশ নিতে হয়।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এই সুন্দর একটি দিনে পৃথিবীতে আমার জন্ম হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সুন্দর একটি জীবন হয়েছে, সুস্থ-সুন্দরভাবে বেঁচে আছি, তাই মহান আল্লাহর কাছে সব সময়ই আমি শোকরিয়া করি। আগামী দিনগুলোতেও যেন এভাবে বেঁচে থাকতে পারি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে।
১৯৬৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া এই কণ্ঠশিল্পী চলচ্চিত্র, আধুনিক গান, নজরুল সংগীত, লোকগীতিসহ প্রায় সব ধরনের গানে সমান পারদর্শী। ১৯৭৮ সালে সর্বপ্রথম তিনি টিভিতে পারফর্ম করেন। একই বছর তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে ‘নতুন কুঁড়ি’র চ্যাম্পিয়ন হয়। তিনি টানা ৩ বছর ‘জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতা’র চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন।
প্রায় ৪০ বছর ধরে সংগীতাঙ্গনে সমানতালে কাজ করে যাওয়া এই গায়িকা এ পর্যন্ত চলচ্চিত্রে তিন হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। প্লে-ব্যাকের পাশাপাশি প্রকাশিত হয়েছে তার একাধিক একক ও যৌথ গানের অ্যালবাম।
গানের পাশাপাশি লেখক হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে কনকচাঁপার। তিনি ‘স্থবির যাযাবর’ নামে একটি অটোবায়োগ্রাফি লিখেছেন, ২০১১ সালের অমর একুশে বইমেলায় এটি প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও ২০১২ সালে মুখোমুখি যুদ্ধ, মেঘের ডানায় চড়ে (২০১৬), কাঁটা ঘুড়ি (২০১৮), সেই পথে যাও (২০১৯), কাঁটা ঘুড়ি-২ (২০১৯) বইগুলো প্রকাশিত হয়।
চলচ্চিত্রে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন কনকচাঁপা। পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার, দর্শক ফোরাম পুরস্কার, প্রযোজক সমিতি পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা।
পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত কনকচাঁপা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-১ কাজিপুর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন তিনি। কনকচাঁপার অভিযোগ, এই দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার তাকে কালো তালিকাভুক্ত করে রেখেছিল। বিটিভিসহ সরকারি কোনো প্রোগ্রামে তিনি গান গাওয়ার প্রস্তাব পান না দীর্ঘদিন। দেশে কোনো কনসার্ট করারও সুযোগ পাননি।