নিলামে উঠছে এমপিদের আনা বিলাসবহুল গাড়ি, ১টির মূল্য ৮ থেকে ১২ কোটি
এমপি কোটায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ২৮৮ কোটি টাকা মূল্যের ২৪টি ল্যান্ড ক্রুজার নিলামে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকায় কেবল কোটি টাকায় এসব গাড়ি আমদানির সুযোগ পান সংসদ সদস্যরা। সদ্য বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যরা এ সুযোগ হাতছাড়া করেননি। কিন্তু জাপান ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা ৪২টি বিলাসবহুল গাড়ি খালাসের আগেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে, ভেঙে যায় সংসদ। ফলে এখন আর শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িগুলো নেওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ, এখন গাড়িপ্রতি শুধু শুল্কই দিতে হবে ৭ কোটি টাকারও বেশি। উপরন্তু হাসিনা সরকারের অধিকাংশ এমপি এখন আত্মগোপনে চলে গেছেন নতুবা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাই গাড়িগুলো খালাস নেওয়া হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের তথ্যানুসারে, গাড়িগুলো ১২তম সংসদের সদস্যরা আমদানি করেছিলেন। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ ভেঙে দেওয়ার কারণে তারা এই শুল্কমুক্ত সুবিধা নিতে পারেননি। দেশের বাজারে প্রতিটি গাড়ির বর্তমান মূল্য ৮ কোটি থেকে ১২ কোটি টাকা।


এদিকে বন্দরে অবতরণের ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না নিলে বিধি অনুযায়ী নিলামে ওঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে ২৪টি গাড়ি নিলামে তোলার ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগ। প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এসব গাড়ি নিলামে তোলা হবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তবে গাড়িগুলো শুল্ক পরিশোধ করে খালাস নেওয়ার সুযোগ রয়েছে আমদানিকারকের; ফলে দুই দফা চিঠি দিতে হবে। এরপরও খালাস না নিলে নিলাম ডাকা হবে।
জানা গেছে, এমপি কোটায় আসা গাড়িগুলো চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কারশেডে রয়েছে। গাড়িগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমদানিকারক ডেলিভারি না নেওয়ায় নিলামে তোলার জন্য কাস্টমসকে চিঠি দেওয়ায় নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়। নিলামের আগে এরই মধ্যে গত সপ্তাহে প্রথম দফায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, আরও ৬টি গাড়ির আমদানিকারকদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কোনো জবাব না পাওয়া গেলে এই গাড়িগুলোও নিলাম প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের তথ্যমতে, নতুন আসা গাড়িগুলোর আমদানিকারকদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী তারানা হালিম, ময়মনসিংহের আব্দুল ওয়াহেদ, জামালপুরের আবুল কালাম আজাদ, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এস আল মামুন, বাঁশখালীর মুজিবুর রহমান, খুলনার এসএম কামাল হোসেন, নওগাঁর সুরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, গাইবান্ধার শাহ সরোয়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসএকে একরামুজ্জামান, নেত্রকোনার সাজ্জাদুল হাসান, ঝিনাইদাহের নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, যশোরের তৌহিদুজ্জামান ও সুনামগঞ্জের মুহাম্মদ সাদিক। আরও দুইজন আমদানিকারকের নাম এখনও জানা যায়নি।
এর আগে জুলাইয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও ব্যারিস্টার সুমনসহ সাতজন এমপি তাদের গাড়ি ছাড়িয়ে নিলাম এড়ান।