হামলায় বাঁচার কোন জায়গা নেই গাজায়, একদিনে ৫০ শিশুসহ নিহত ৮৪

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০২৪

ছবি: আলজাজিরা

পুরো গাজা উপত্যকা জুড়ে এখনও ইসরায়েলি সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিশেষকরে, মধ্য গাজা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নুসিরাত শরণার্থী শিবির টার্গেট করে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ চালাচ্ছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। শনিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি ফাইটার জেট আকাশ থেকে বোমাবর্ষণের পাশাপাশি আর্টিলারি আক্রমণও চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়াও, ড্রোন ব্যবহার করে বেসামরিকদের তাড়া করে চলেছে আইডিএফ। সন্দেহভাজন মনে হলেই ড্রোন থেক্বে গুলি করা হচ্ছে। যদি ড্রোনের গুলি থেকে কেউ বেঁচে যায়, তাহলে আর্টিলারি। এরপরও যদি কেউ বেঁচে থাকে, তাহলে বোমাবর্ষণের মাধ্যমে ‘এনেমি এলিমিনেট’ করছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮৪ জন। নিহতদের মধ্যে ৫০ জনই শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক; এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৮৬ জন। শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এ তথ্য।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে নিহত হয়েছেন ৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১৮৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৫০ জন শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক।”

“তবে নিহত এবং আহতদের সংখ্যা আরও বেশি; কারণ যারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, লোকবল ও উপকরণের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।”বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে নিহত হয়েছেন ৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১৮৬ জন। নিহতদের মধ্যে ৫০ জন শিশু এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক।”

“তবে নিহত এবং আহতদের সংখ্যা আরও বেশি; কারণ যারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, লোকবল ও উপকরণের অভাবে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।”

Nagad

এদিকে, অনেক আবাসিক বিল্ডিং আছে যেগুলো বেসামরিক লোকে পরিপূর্ণ, সেই বিল্ডিংগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচানো জন্য নুসিরাত শরণার্থী শিবির থেকে দেইর আল-বালাহ ও মাগাজিসহ অন্যান্য শহরে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে গাজাবাসীরা।

তবে, তাতেও কোন লাভ নেই অসহায় ফিলিস্তিনিদের। কারণ- ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কোয়াডকপ্টার ড্রোন ও তাদের স্থল বাহিনী দিয়ে এ ধরনের এলাকায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর একের পর এক হামলা অব্যাহত রেখেছে। তীব্র বোমা হামলার ফলে উত্তর গাজার বেইট লাহিয়াত এলাকাটি ছিন্নভিন্ন ল্যান্ডস্কেপে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক বিশ্ব এবং তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সেসব চেষ্টা সফল হচ্ছে না। কারণ অভিযান বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলকে নিয়মিত আহ্বানও জানানো হলেও তেল আবিব তাতে কর্ণপাত করছে না।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর আগে গাজা উপত্যকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২২ লাখ। অভিযানের গত এক বছরে গাজার বাসিন্দাদের প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার কারণে সেখানে খাদ্য, সুপেয় পানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছেন গাজার ফিলিস্তিনিরা। সুত্র : আনাদোলু এজেন্সি, আলজাজিরা