আদালতে কাঁদলেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, রিমান্ড মঞ্জুর
রাজধানীর বাড্ডায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিকালে আদালতে কাঁদলেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ. আজহারুল ইসলামের আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে শাজাহান খানকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। ১০টা ৮ মিনিটে রিমান্ড শুনানি শুরু হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক শফিউল আলম তার পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন, আর আসামিপক্ষে মিজানুর রহমান বাদশা রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন।


শুনানির সময় শাজাহান খান আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, “পুলিশ গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে পারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, আমি নই। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই, অথচ আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুধু আমিই নই, আমার ছেলে আসিবুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে, সে এখন জেলে। পাঁচ মাস ধরে আমি আমার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। সে ঢাকায় ছিলও না, মাদারীপুরে ছিল।”
এ কথা বলতে বলতেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং দুই হাত জোড় করে আরও কথা বলার সুযোগ চান। তিনি দাবি করেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের মামলায় জড়িত ছিলেন এবং তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আইনের বাইরে কিছু করা যাবে না বলে তিনি রাজি হননি। এর জেরেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।
শুনানি শেষে আদালত শাজাহান খানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসময় তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে চোখ মুছতে থাকেন। পরে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট ও হাতকড়া পরিয়ে তাকে আদালত থেকে বের করা হয়।
এদিকে, শাজাহান খানের আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, নিহতের মা ও স্ত্রী মামলার বাদী লুৎফুর রহমানকে চেনেন না। লুৎফুর রহমানের শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম, যিনি একটি হত্যাকাণ্ডের মামলায় আসামি, তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করেছিলেন শাজাহান খানের কাছে। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় প্রতিশোধ হিসেবে মামলা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন আইনজীবীরা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন রফিকুল ইসলাম। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর তার মামা লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।