সেতুর অভাবে টাঙ্গাইলে দুর্ভোগে ৩০ হাজার মানুষ, ভোগান্তি চরমে
টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে মাহমুদনগর ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে তাদের চলাচল আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
টাঙ্গাইল শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত মাহমুদনগর ইউনিয়নে প্রায় ২৪টি গ্রামে ৪ হাজার ২০০টি পরিবার বসবাস করে। এই ইউনিয়নটি নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এলাকার মানুষের যোগাযোগব্যবস্থা খুবই দুর্বল।


স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, সেতু না থাকায় তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারে নেওয়া সম্ভব হয় না, ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন।
স্থানীয় কৃষক মুন্নাফ আলী, আব্দুল জব্বার ও আরফান আলী বলেন, আমরা খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে বাজারে যাই, যা সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়বহুল। শহরে পণ্য নিয়ে গেলে খরচ বেশি হয়ে যায়, আর গ্রামে বিক্রি করলে দাম কম পাওয়া যায়।
এছাড়া বর্ষাকালে নৌকা পারাপারে সমস্যা হয়, আর শুকনো মৌসুমে তপ্ত বালুর পথ পায়ে হেঁটে পার হতে হয়, যা খুবই কষ্টকর।
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শান্তা আক্তার, শামসুন্নাহার ও আরশেদ আলী বলেন, বর্ষাকালে নৌকায় যেতে হয়, আর শুকনো মৌসুমে বালু পেরিয়ে হাঁটতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন কষ্ট করতে হয়। সেতু হলে চলাচল অনেক সহজ হতো।
স্থানীয় ভ্যানচালক শরিফুল ইসলাম জানান, বর্ষায় নৌকায় ভ্যান উঠানো কঠিন। অনেক সময় নৌকা দুলে পড়ে যায়। আবার শুকনো মৌসুমে বালুর মধ্যে ভ্যান চালানো অসম্ভব হয়ে যায়।
মাহমুদনগর ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম শিকদার বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান বিএনপি সরকারের সময় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং টেন্ডারও হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে জরুরিভাবে সেতু নির্মাণ করা দরকার।
টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, গোলচত্বর এলাকায় ধলেশ্বরী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা ও প্রাথমিক জরিপ করা হয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। শিগগিরই প্রাথমিক প্রাক্কলন তৈরি করে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
টাঙ্গাইলের মাহমুদনগর ইউনিয়নের জনগণের বহুদিনের প্রত্যাশিত সেতুটি নির্মিত হলে তাদের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে, কৃষিপণ্য সঠিক সময়ে বাজারে পৌঁছাবে এবং শিক্ষার্থীদেরও আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, এমনটাই আশা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সূত্র; জাগো নিউজ