উন্নয়নের মাপকাঠি হওয়া উচিত কাজের গুণগত মান, শুধু অর্থছাড় নয়: ফয়েজ আহমদ
উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি শুধুমাত্র অর্থছাড়ের উপর নির্ভর করে। এ চর্চা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। অর্থছাড় অবশ্যই দরকার কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পে কাজের গুনগত মান নিশ্চিত হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি আমাদের মূল ফোকাস হওয়া উচিত।
আজ শুক্রবার (২ মে) কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে কুমিল্লা জেলার চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এসব কথা বলেন।


বিশেষ সহকারী বলেন, আমরা জানি সরকারি কাজে অর্থছাড় হয়ে যায় কিন্তু কাজ শেষ হয় না এ বিষয়ে সবাই সতর্ক থাকবেন। অফিসে বসে প্রকল্প সম্পর্কে খোঁজখবর না নিয়ে প্রয়োজনে প্রকল্প এলাকায় যেতে হবে। প্রকল্পের ভৌত অবস্থা নিয়মিত যাচাই করতে হবে। ঠিকাদারদের সব সময় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। এগুলো না করলে কোন পরিবর্তন সাধিত হবে না। সরকারি প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ওভার এস্টিমেশন হয়, ইচ্ছাকৃত সময় ক্ষেপণ হয় ফলশ্রুতিতে সরকারের ব্যয় বাড়ে এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ভূমির উপরিভাগের টপসয়েল তৈরি হতে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে, এই মাটি ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। টহল জোরদার এর মাধ্যমে এই মাটিকাটা বন্ধ করতে হবে। টপসয়েল নষ্টকারী এবং ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। এজন্য আপনাদের উপর কোন পলিটিক্যাল চাপ আসলে সরকার আপনাদের প্রটেক্ট করবে। সরকারের দিক থেকে আপনাদের উপর কোন প্রেশার আসবে না। সরকারি কর্মকর্তাদের নৈতিক যেকোনো পদক্ষেপে সরকার সমর্থন দিবে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে বাজার অব্যবস্থাপনার কারণে সৃষ্ট যানজট নিরসনেরও নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
প্রতিটি উপজেলায় একটি করে পার্ক হবে। উপজেলায় যে পুকুর বা দীঘী আছে তার পাড় সংরক্ষণ করে সেখানে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করুন যাতে পরিবারগুলো বেড়াতে যেতে পারে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্ব স্ব থানা টহলের ব্যবস্থা করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আপনারা এই জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, আপনারা সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। শ্রম দিচ্ছেন, মেধা খাটাচ্ছেন, সরকারের অর্থ ব্যয় হচ্ছে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন কিন্তু তবুও মানুষের অনেক অভিযোগ। অনেক রকম অপ্রাপ্তি, অসন্তোষ তারা প্রকাশ করেন। জনগণের যে সেবা পাওয়ার কথা তা তারা পাচ্ছে না। আমরাও কাঙ্ক্ষিত উন্নতি সাধন করতে পারছি না। কেন পারছিনা এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে।
কুমিল্লার স্থানীয় সরকার বিভাগ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন, বিএডিসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিসিক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এর কর্মকর্তারা সভায় তাদের প্রকল্পের অগ্রগতি এবং সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়সার এর সভাপতিত্বে জেলার সকল সরকারি অফিসের প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সভায় উপস্থিত ছিলেন।