ইতালিতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঐতিহাসিক সমঝোতা স্মারক সই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২৫

ইতালি ও বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে।

মঙ্গলবার (৬মে) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং ইতালির পক্ষে স্বাক্ষর করেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি। চুক্তির লক্ষ্য—অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা এবং বৈধ পথে অভিবাসন বাড়ানো।

ড. আসিফ নজরুল জানান, ইউরোপীয় দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বাড়াতে সরকারের উদ্যোগে ইতোমধ্যে পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া সহ ছয়টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এখন যুক্ত হলো ইতালিও।

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ইতালিসহ ইউরোপে গমনেচ্ছু কর্মীরা যেন নিরাপদে ও সম্মানজনক পারিশ্রমিকে কাজ করতে পারেন। ইতালি সিজনাল ও নন-সিজনাল দুই ধরনের কর্মী নেবে। এই লক্ষ্যে যুগ্ম ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে, যারা প্রতি বছর একবার বৈঠকে বসবে।’

ভাষা ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোর মাধ্যমে কর্মীরা ইতালিয়ান ভাষা শিখতে পারবেন। ইতালিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়াও সহজ করতে আলোচনা হয়েছে।’

Nagad

অভিবাসনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেওয়ার বিষয়েও ইতালি সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কতজন কর্মী ইতালিতে যাবে ও কোন খাতে নিয়োগ দেওয়া হবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘সমঝোতা স্মারকে এত বিস্তারিত থাকে না। তবে আমাদের বর্তমান কোটার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে ইতালি ইতিবাচক। আশা করছি, এর ফলে অবৈধ পথে যাওয়া অনেকটাই কমে আসবে।’

অনুষ্ঠানে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ইতালির সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমরা সবসময় বৈধ পথে শ্রমিকদের আনতে চাই। এই সমঝোতা স্মারক আমাদের বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী করবে।’

এছাড়া ড. আসিফ নজরুল সৌদি সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, ‘সৌদি আরবে অবৈধভাবে অবস্থানরত নারী কর্মীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। দেশটি বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নিতে আগ্রহী।’

তিনি জানান, জর্ডানেও পুরুষ কর্মী পাঠানো এবং নারী কর্মীদের বৈধতা প্রদানের বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। ‘যেসব নারী কর্মী বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়েছেন, তারা স্বীকৃত প্রক্রিয়ায় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে জড়িমানা ছাড়াই বৈধতা পেতে পারবেন,’ বলেন তিনি।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূইয়া এ চুক্তিকে “ঐতিহাসিক মাইলফলক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।