ড. ইউনূসের জাপান সফরে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হবে
চার দিনের সরকারি সফরে জাপান যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) দিবাগত রাতে তিনি টোকিওর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। সফরকালে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রুহুল আলম সিদ্দিকী।


তিনি জানান, ২৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত টোকিও সফর করবেন ড. ইউনূস। সফরের প্রথম দিনেই বিকেলে তিনি জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের প্রেসিডেন্ট তারো আসোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
২৯ মে ড. ইউনূস অংশ নেবেন টোকিওতে আয়োজিত ‘নিক্কেই ফোরাম’-এ এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে একটি মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন। সেখানে জাপানের প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশ কীভাবে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হবে।
সফরকালে জাইকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনায় থাকবে চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতা।
৩০ মে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন ড. ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার। বৈঠকের আগে ড. ইউনূসকে দেওয়া হবে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার।
বৈঠকে কৌশলগত সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কৃষি, অবকাঠামো, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
এছাড়া, জেট্রোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। একইদিন ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ ও জাপানি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেবেন তিনি।
সফরের শেষ দিন বিকেলে সোকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করা হবে।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব জানান, সফরে বিনিয়োগ, জ্বালানি, প্রযুক্তিগত সহায়তা, বাজেট সহায়তা এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রেলপথকে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণে এক্সচেঞ্জ অব নোটস স্বাক্ষরিত হবে।
বাংলাদেশ সফরকালীন সময়ে জাপানের কাছে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা চাইবে। এটি সহজ শর্তের ঋণ আকারে দেওয়ার বিষয়ে জাপান সম্মত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
৩১ মে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে টোকিও থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ঢাকায় ফিরবেন ড. ইউনূস।
জাপানে শ্রমশক্তি রপ্তানি বিষয়ে রুহুল আলম বলেন, জাপানে কর্মক্ষম মানুষের চাহিদা মেটাতে ইতোমধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। এবার বিএমইটি ও জাপানের দুইটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নতুন সমঝোতা সই হবে। প্রতিষ্ঠান দুটি বাংলাদেশে জাপানিজ ভাষা ও দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ দেবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইস্ট এশিয়া ও প্যাসিফিক উইংয়ের মহাপরিচালক নুর এ আলম জানান, জাপান মোট ১৬টি খাতে কর্মী নিতে আগ্রহী। এর মধ্যে কেয়ারগিভার ও হসপিটালিটি খাতও রয়েছে।