সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো মতপার্থক্য হয়নি: সেনা সদর
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দায়িত্ব। সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনা মেনেই সেই দায়িত্ব পালন করছে। সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো মতপার্থক্য হয়নি।
সোমবার (২৬ মে) দুপুরে সেনা সদরে এক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই কথা বলা হয়। লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।


সেনা কর্মকর্তা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে সবার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। সেনাবাহিনী তাদের দায়িত্ব অব্যাহত রাখবে।
লে. কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী কোনো ছাড় দেবে না। বাংলাদেশ-মিয়ানমার করিডোর একটি স্পর্শকাতর বিষয়। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কাজে সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হবে না।
সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমাদের যতক্ষণ শক্তি থাকবে সীমান্তে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কাজ করব। আরসা বাহিনী অস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। সীমান্ত পরিস্থিতি এখন বেশ সংবেদনশীল, আমরা সতর্ক আছি।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ), যা বম পার্টি নামেও পরিচিত। এই সংগঠনের সদস্যদের পোশাক উদ্ধারের বিষয়ে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কুকি চীনের (কেএনএফ) ৩০ হাজার পোশাক পাওয়া গেছে, এটা সামাজিক মাধ্যমে এসেছে, এটা বস্তুনিষ্ঠ। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। খুঁজে দেখার কাজ করছি। বম সম্প্রদায়ের মানুষই আছে ১২ হাজার। তাই এই ৩০ হাজার পোশাক এই সংগঠনেরই কি না তা খুঁজে দেখা হচ্ছে।
সীমান্তে পুশইন কোনোভাবেই কাম্য নয় জানিয়ে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, আমরা বসে থাকবো এটা ভাবার কারণ নেই। এই পরিস্থিতি বিজিবিই নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের সহায়তা লাগলে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সেখানে যাবে।
মব তৈরির বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, কেউ মব তৈরি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র ও ৭০৯ রাউন্ড গোলাবারুদ এবং আগষ্ট থেকে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও গত এক মাসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত মোট ১ হাজার ৯৬৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত সর্বমোট ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ২০ মে ভাষানটেক এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ৪টি বিদেশি পিস্তল, ২৮ রাউন্ড গুলিসহ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিটলু বাবুসহ তার গ্যাং এর দশ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার ফলে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্থি ও নিরাপত্তা বিরাজ করছে।