বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার ফুলে সিক্ত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা
মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে জনতার ঢল নেমেছে। ফুলেল শ্রদ্ধা আর গভীর ভালোবাসায় সর্বসাধারণ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শ্রদ্ধা নিবেদন করার পর স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।


সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। এ সময় সেখানে কেউ কেউ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকছেন। আবার অনেককেই দেখা গেছে সুরা ফাতেহা পাঠ করে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করতে।
এর আগে, সকাল ৭টা ৫ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সেখানে কিছু সময় তারা নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রসঙ্গত, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাঙালি জাতির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা জাতিকে মেধাশূন্য করতে এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। তখন নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে বাঙালিকে মেধা-মননহীন করে দেওয়ার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল নরঘাতক পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তাদের সহায়তা করেছিল এদেশি কতিপয় অনুচর। তারা দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, রাজনীতিকসহ মেধাবী সন্তানদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের তুলে আনে। ঘাতকের দল বুদ্ধিজীবীদের গুম ও নির্মমভাবে হত্যা করে।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পরে রাজধানীর রায়েরবাজারে পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে জল্লাদখানায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হাতবাঁধা, নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া গেলে পাকিস্তানি ঘাতকদের বুদ্ধিজীবী হত্যার এই ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয়।
বাঙালি জাতি বরাবরই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের আগে এই দিনটিতে শ্রদ্ধা ও বেদনার সঙ্গে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে থাকে। এবারও দিনটি উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।