গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হামাস, ইসরায়েলের পাল্টা শর্ত
মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। গতকাল শনিবার (২৯ মার্চ) হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খলিল আল-হাইয়া এক টেলিভিশন ভাষণে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘দুই দিন আগে আমরা মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় একটি প্রস্তাব পেয়েছি। আমরা ইতিবাচকভাবে এটি গ্রহণ করেছি। আশা করি, ইসরায়েলি দখলদাররা এটিকে ব্যাহত করবে না।’


যুদ্ধবিরতির শর্ত ও আলোচনা
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতে মিশর নেতৃত্ব দিচ্ছে। মিশরের নিরাপত্তা সূত্রের দাবি, ইসরায়েল ইতোমধ্যে নতুন যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনায় ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম ধাপে প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে তারা একটি ‘পাল্টা প্রস্তাব’ দিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বিতভাবে তৈরি হয়েছে।
এর আগে ১৯ জানুয়ারি, ১৫ মাসের যুদ্ধের পর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। সেই চুক্তির অধীনে কিছু ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্ত করা এবং কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নতুন প্রস্তাবে দ্বিতীয় ধাপে অবশিষ্ট বন্দিদের মুক্তির পাশাপাশি গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে।
গাজায় হামলা অব্যাহত
যুদ্ধবিরতির আলোচনা চললেও গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার (২৯ মার্চ) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকার জেনিনা মহল্লায় ‘স্থল অভিযান’ চালাচ্ছে। তাদের দাবি, এই অভিযান নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারণের অংশ এবং হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগ করতেই এ হামলা চালানো হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজার খাদ্য সংকট চরমে
যুদ্ধের কারণে গাজায় মানবিক সংকটও তীব্রতর হচ্ছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় খাদ্যের মজুত মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য যথেষ্ট রয়েছে। মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা থাকায় খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে, সুদানে যুদ্ধ অবসানে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেখানে সহিংসতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।