বিদ্যালয় মাঠের ৭০ ভাগই বছরের ৬ মাস থাকে পানির নিচে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৪:৩১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২২

খেলাধুলা নেই। নেই স্বাভাবিক হাটাচলার ব্যবস্থাও । কারণ বছরের অর্ধেকেরও বেশী সময় স্কুলের মাঠটি থাকে পানির নিচে। এই চিত্রই চোখে পড়বে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে।

রবিবার (২৮ আগস্ট) সরেজমিনে মান্দারতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে দুইটি একতলা ভবন রয়েছে। উত্তর পাশের ভবনটি নতুন আর পশ্চিমেরটা পুরাতন। বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ হয়েছে সম্প্রতি। যার একটি প্রধান ফটক রয়েছে। এই ফটক থেকে একটি রাস্তা বেরিয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে চলে গেছে। সেটা থেকে আরেকটি শাখা রাস্তা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুতারন ভবনের সামনে গিয়ে মিশেছে। আর ইতিপূর্বে থাকা আরেকটি রাস্তা দুই-ভবনের মাঝ দিয়ে পূর্ব দিকে যাদবপুর-মহেশপুর সড়কে মিশেছে।

এখন নতুন রাস্তা আর পুরানো রাস্তার মাঝে পড়েছে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। যে স্থানটি অপেক্ষাকৃত নিচু। ওই স্থানে ২ থেকে ৩ ফুট পানি জমে আছে। অফিস ভবনের মধ্যে জমে থাকা পানি সদ্য নেমে গেছে, তবে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া নতুন ভবনের সামনে কিছুটা জায়গা রয়েছে যেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে আছে। এখানে পুরাতন আরেকটি ভবন ছিল, যা ভেঙ্গে দেওয়ার পর তৈরি হওয়া গর্তগুলো আজো ভরাট করা হয়নি। বরং সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইট-পাটকেল।

অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত ৭২ শতক জমির উপর। বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২২৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের পাঠদানে ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। আরও আছেন একজন দপ্তরি। বিদ্যালয়ে দুইটি ভবন রয়েছে, যার শ্রেণী কক্ষ ৪ টি আর অফিস কক্ষ ১ টি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, অফিস থেকে শ্রেণী কক্ষে যাবার জন্য অনেক সময় শিক্ষকদের প্যান্ট গুটিয়ে যেতে হয়। কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয় মাঠে ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। কখনও ক্লাসে যেতে গিয়ে পা পিছলে পড়তে হয়, আবার মাঠে জমে থাকা পানির জন্য প্যান্ট গুটিয়ে চলতে হয়। এই অবস্থা দীর্ঘ দিনের বলে তিনি জানান।

তিনি আরও জানান, বিদ্যালয় মাঠের ৭০ ভাগ বছরের ৬ মাস পানির নিচে থাকে। যেখানে ২ থেকে ৩ ফুট পানি জমে থাকে। এখনও বিদ্যালয়ের সামনে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। বৃষ্টির সময় এই পানি বেড়ে অফিস কক্ষেও প্রবেশ করে। তখন অফিসেও বসা যায় না। তিনি আরও জানান, নতুন ভবনটির সামনে মাঠের ৩০ শতাংশ জায়গা খালি থাকলেও সেখানে ইট-পাথর পড়ে আছে। ওই স্থানে বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবন ছিল, যেটা ভেঙ্গে নেওয়ার পর সেখানে গর্ত তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ভবনটি বিক্রি করা হয়েছে। যিনি ক্রয় করেছেন তিনি মাটি খুড়ে ভবনের ইট উঠিয়ে নিয়েছে, কিন্তু মাটি সমান করেনি। তারা বারবার তাগাদা দিলেও কোনো কাজ হয়নি। যে কারণে বৃষ্টি হলে অ্যাসেম্বলি করাতে পারেন না। এছাড়া যেখানে একটু জায়গা পান সেখানেই অ্যাসেম্বলি করান বলে জানান।

Nagad

মহেশপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু হাসান জানান, তারা ইতিমধ্যে চলাচলের জন্য একটা রাস্তা তৈরি করার ব্যবস্থা করেছেন। আগামীতে এডিবি’র বরাদ্ধ থেকে মাঠে মাটি ভরাটের জন্য এখন থেকেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছেন মাঠে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।